পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চর বিষ্ণুপুরের বাসিন্দারা প্রতি বছর বর্ষাকালে ভয়াবহ জলযন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন। নদিয়া জেলার সীমানায় অবস্থিত এই গ্রামটির সঙ্গে নদিয়ার সংযোগকারী একমাত্র রাস্তাটি বর্ষার সময়ে জলের নিচে চলে যায়, ফলে গ্রামবাসীদের যাতায়াত কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
এই গ্রামে পৌঁছতে গেলে প্রথমে কাটোয়া মহকুমার কালিকাপুর ঘাট পর্যন্ত যেতে হয়, সেখান থেকে ভাগীরথী নদী পার হয়ে তবেই চর বিষ্ণুপুরে প্রবেশ করা যায়। কিন্তু বর্ষাকালে চর বিষ্ণুপুর থেকে নদিয়ার দিকে যাওয়ার এই রাস্তাটিতে প্রায় কোমর সমান জল জমে যায়। ফলে গাড়ি বা সাইকেল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে যাতায়াতও দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে।
গ্রামের এক বাসিন্দা ভবেশ বারুই বলেন, “বর্ষা এলেই আমরা আতঙ্কে থাকি। এই রাস্তায় প্রথম থেকেই জল জমে থাকে এবং যাতায়াত করতে চরম সমস্যা হয়। প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।”
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বর্ষায় স্কুলপড়ুয়া থেকে শুরু করে শ্রমজীবী মানুষকে ডিঙি বা নৌকা ব্যবহার করে অথবা হাঁটু সমান জল ভেঙে প্রত্যেক দিনের কাজকর্মে যেতে হয়। এই সমস্যাটি স্থানীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি।
জল জমার পাশাপাশি নদীর পার ভাঙনও চর বিষ্ণুপুরের একটি বড় সমস্যা। গত কয়েক বছরে ভাঙনের কারণে বহু ঘরবাড়ি এবং চাষের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে গ্রামবাসীরা আশঙ্কা করছেন। এই সকল সমস্যার মূলে রয়েছে যাতায়াতের প্রধান রাস্তাটি, যা প্রতি বছর বর্ষায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।