ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার শীতল সম্পর্কের আবহে এক বড়সড় কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিল নয়া দিল্লি। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষকৃত্যে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে সশরীরে হাজির থাকছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আগামীকাল বুধবারই তাঁর ঢাকায় পৌঁছনোর কথা রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল, জয়শঙ্করের এই সফর তা প্রশমিত করার একটি বড় বার্তা হিসেবেই দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র ভারত নয়, খালেদা জিয়াকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে একই দিনে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার-ও। এছাড়া ভুটানের বিদেশমন্ত্রী এবং মলদ্বীপের একজন উচ্চপদস্থ মন্ত্রীরও শেষকৃত্যে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর ঢাকার পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারতের এই উচ্চপর্যায়ের সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জয়শঙ্করের এই সফর আসলে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার এক সচেতন কূটনৈতিক সংকেত।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোরে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ৮০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভার সিরোসিস, আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস এবং হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি সিসিইউ-তে ভর্তি ছিলেন এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১১ ডিসেম্বর তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার ভোর ৬টা নাগাদ চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
খালেদা জিয়ার প্রয়াণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে যেমন শোকের ছায়া নেমে এসেছে, তেমনই তাঁর শেষকৃত্যকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে এক নতুন মোড় আসার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ভারতের বিদেশমন্ত্রীর এই সফর ঢাকার সঙ্গে দিল্লির আগামী দিনের সম্পর্কের সেতু হিসেবে কাজ করতে পারে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ওয়াকিবহাল মহল।