গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি এবং বিভিন্ন ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার কারণে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লকের ঝাউডাঙা পঞ্চায়েত এলাকায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিস্তীর্ণ কৃষিজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় পাট ও ফুল চাষিরা চরম সংকটে পড়েছেন।
ঝাউডাঙার নিচু এলাকার সব পাটখেত সম্পূর্ণভাবে জলে ডুবে গেছে। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, জল জমে যাওয়ায় পাট কাটা সম্ভব হচ্ছে না এবং শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে সময়মতো পাট কাটতে না পারলে পাটের গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রহ্লাদ ঘোষ বলেন, “জল বাড়তে থাকলে বাড়ির ভিতরেও জল ঢুকে যাবে। পাটচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং পাট কাটার জন্য লোকও পাওয়া যাচ্ছে না।”
পাট চাষের পাশাপাশি হালতাচড়া এলাকার ফুল চাষিরাও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখানে প্রচুর পরিমাণে গাঁদা ফুলের চাষ হয়, যা রাজ্যের বাইরেও পাঠানো হয়। কিন্তু জল জমে যাওয়ায় ফুলগাছগুলো নষ্ট হতে বসেছে। দুর্গাপূজা ও অন্যান্য উৎসবের বাজার ধরার জন্য যাঁরা ফুল চাষ করেছিলেন, তাঁদের স্বপ্ন এখন ভেঙে যাওয়ার পথে। ফুল চাষি সহদেব দফাদার বলেন, “যদি জল না নামে, তাহলে গাছগুলো রোদে শুকিয়ে মরে যাবে। সামনে এতগুলো উৎসব, আমাদের রোজগারে বড় ধাক্কা আসবে।”
এই দুর্যোগের ফলে এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ঝাউডাঙা থেকে নদীয়া জেলার সংযোগকারী প্রধান সড়কটি জলের তলায়। এই পথ দিয়ে মানুষজন এখন নৌকায় যাতায়াত করছেন। কৃষকদের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে স্থানীয় কৃষিজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকা বর্তমানে চরম সংকটে পড়েছে।