প্রতি বছরের মতো এবারও হুগলি জেলায় তীব্র বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্যা পরিদর্শনের সময় ত্রাণশিবিরে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার উপস্থিতি নিয়ে তিনি কড়া ভাষায় কটাক্ষ করেছেন। শুভেন্দুর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ‘বালি মাফিয়া’ হিসেবে পরিচিত হুদা খানের অর্থে তৈরি খিচুড়ি বিতরণ করেছেন।
শুভেন্দু অধিকারী তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অপদার্থতার কারণে হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকা আবারও জলের তলায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রাণশিবিরে গিয়ে বালি মাফিয়া হুদা খানের টাকায় বানানো খিচুড়ি বিতরণ করছেন, আর সেই হুদা খানকেই পাশে রাখছেন। এটাই বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের শাসনব্যবস্থা।”
মঙ্গলবার হুগলির বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি ত্রাণশিবিরে বন্যার্তদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের মধ্যে খিচুড়ি বিতরণ করেন। এ সময় তার পাশে ছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা হুদা খান। এই ছবি প্রকাশ্যে আসার পরই শুভেন্দু অধিকারী তাকে ‘বালি মাফিয়া’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং অভিযোগ করেন, এই ধরনের ব্যক্তিরা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি তুলে পরিবেশের ক্ষতি করছে, যা বন্যার প্রকোপ বাড়াতে সাহায্য করছে।
শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, নদী থেকে অবৈধ বালি উত্তোলনের ফলে নদীর পাড় দুর্বল হচ্ছে এবং বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে। তিনি দাবি করেন, এই মাফিয়াদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে তৃণমূল সরকার, যার ফলে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তবে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, হুদা খান একজন জনপ্রতিনিধি এবং তিনি স্থানীয় ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করছিলেন। এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনা একদিকে যেমন রাজ্যের প্রশাসনিক ব্যর্থতাকে তুলে ধরেছে, তেমনি অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগকেও সামনে এনেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রতি বছরই ভারী বৃষ্টি এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধির কারণে হুগলির নিম্নাঞ্চলগুলি প্লাবিত হয়। এ বছরও ফারাক্কা ব্যারেজের গেট খোলার ফলে গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। তাদের মতে, বন্যা প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নে সরকারের ব্যর্থতাই এই সমস্যার মূল কারণ।