খানাকুলের বন্যা পরিস্থিতি এক গুরুতর প্রশ্ন সামনে এনেছে—প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সরকারি পরিষেবা ও শিক্ষাব্যবস্থা কেন এত ধীর গতিতে কাজ করে? ডিভিসির ছাড়া জলে যখন কামদেবপুর ও জয়গোলানন্দপুরের মতো এলাকার স্কুলগুলো জলমগ্ন, তখন স্কুল বন্ধ করার জন্য কেন কোনো সরকারি নির্দেশিকা নেই?
এই প্রশ্নটি কেবল প্রশাসনের দিকে আঙুল তোলে না, বরং শিক্ষাব্যবস্থার নমনীয়তার অভাবকেও তুলে ধরে। কামদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কেন জল পেরিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসছেন, যখন পঠনপাঠনের কোনো পরিবেশই নেই? এর কারণ হলো সরকারি নির্দেশ ছাড়া তাঁরা স্কুল বন্ধ করতে পারেন না। জয়গোলানন্দপুরের মতো অনেক জায়গায় স্কুল আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হলেও পঠনপাঠন বন্ধের আনুষ্ঠানিক নির্দেশ না থাকায় শিক্ষকরা বাধ্য হচ্ছেন নিয়মিত স্কুলে আসতে।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে যে, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশিকার একটি বড়সড় দুর্বলতা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, এবং কেন্দ্রীয় নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে। এর ফলে একদিকে যেমন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে, তেমনি পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। গ্রামীণ রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারাও চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। আশাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিষেবা দিলেও, এই সংকটের মূল কারণগুলোর সমাধান হওয়া জরুরি।