খোদ পুলিশ কোয়ার্টারের নিরাপদ আশ্রয়েই উদ্ধার হলো এক তরুণী হোমগার্ডের নিথর দেহ। ২২ বছর বয়সী ওই তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল ক্যানিং থানা চত্বর। পরিবারের অভিযোগের তির সরাসরি ক্যানিং থানারই এক সাব-ইন্সপেক্টরের (SI) দিকে। এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা জুড়ে।
ঘটনার ভয়াবহতা: মৃত ওই হোমগার্ডের বাড়ি জীবনতলা থানার উত্তর মৌখালি এলাকায়। শুক্রবার ডিউটি শেষে ক্যানিং থানার ঠিক পেছনের পুলিশ কোয়ার্টারে নিজের ঘরে ফিরেছিলেন তিনি। দীর্ঘক্ষণ বাড়ির লোক বারবার ফোন করলেও তিনি সাড়া না দেওয়ায় সন্দেহ বাড়ে। তড়িঘড়ি বোন রুকসানা খাতুন কোয়ার্টারে পৌঁছান। দরজা খুলে ঘরে ঢুকতেই তিনি দেখেন, দিদির দেহ গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে। বোনের আর্তনাদে ছুটে আসেন আশেপাশের মানুষ ও পুলিশ কর্মীরা।
অভিশপ্ত পারিবারিক ইতিহাস: মৃতার পরিবার অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের শিকার। জানা গিয়েছে, মাত্র দু’বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময় ভাঙড়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষে খুন হয়েছিলেন তাঁর বাবা। পরিবারের বড় মেয়ে হিসেবে করুণাভিত্তিতে (Compassionate ground) হোমগার্ডের চাকরি পেয়েছিলেন ওই তরুণী। বাবার শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার মেয়ের রহস্যমৃত্যুতে শোকের কালো ছায়া নেমে এসেছে গোটা গ্রামে।
বিস্ফোরক অভিযোগের নিশানায় এসআই: মৃত্যুর এই ঘটনায় ক্যানিং থানারই এক সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। তাঁদের দাবি:
মৃত তরুণীর সঙ্গে ওই সাব-ইন্সপেক্টরের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
সম্পর্কের বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে বা অন্য কোনো আক্রোশে তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তদন্তে নেমেছে পুলিশ: ক্যানিংয়ের এসডিপিও (SDPO) রামকুমার মণ্ডল জানিয়েছেন, “মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এটি আত্মহত্যা নাকি খুন, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে।” তবে থানার ভেতরেই সহকর্মীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠায় রীতিমতো অস্বস্তিতে প্রশাসন।