বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা! আচমকা ভেঙে পড়ল ক্লাস চলা ঘরের ছাদ, সাংঘাতিক কাণ্ড বলাগড়ে

পাঁচ দিন আগেও যে ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের কলরবে মুখরিত থাকত, সেই নিশ্চিতপুর জুনিয়র বেসিক স্কুলের ছাদ শুক্রবার হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল! বরাত জোরে রক্ষা পেল কচিকাচারা, কারণ ঘটনার সময় ঘরটি খালি ছিল। কিন্তু এই ঘটনা বলাগড়জুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অভিভাবকরা প্রশ্ন তুলছেন, আর কতদিন এভাবেই ‘মৃত্যুফাঁদ’ হয়ে থাকবে সরকারি স্কুলবাড়িগুলো?

পুরনো পরিকাঠামো, অবহেলার নজির
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে নির্মিত এই স্কুলবাড়ির বয়স কম নয়। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এর কোনো সংস্কার হয়নি। জীর্ণ দশা সম্পর্কে শিক্ষা দপ্তর-সহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে বারবার জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। স্থানীয় বাকুলিয়া ধোবাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নিশ্চিতপুর স্কুলের ছাদ ধসের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান বলাগড় বিডিও এবং শিক্ষা দপ্তরের এসআই। তবে এলাকার অভিভাবকরা রীতিমতো ফুঁসছেন। তাঁদের একটাই প্রশ্ন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোন ভরসায় তাঁরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন?

বৃষ্টির জল ও দীর্ঘদিনের অবহেলা
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির কারণে ছাদের বিভিন্ন অংশ থেকে জল পড়ছিল। বিপদ আঁচ করে ওই ঘরে ক্লাস নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। স্কুল খোলার পরই হঠাৎ বিকট শব্দে ছাদের একটি বড় অংশ ধসে পড়ে। তিনি আরও জানান যে, স্কুলের এই বেহাল দশার কথা সমস্ত সংশ্লিষ্ট দফতরকে আগেই অবহিত করা হয়েছিল।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই আশ্বাস অভিভাবক মহলে আর কোনো ভরসা জোগাতে পারছে না। তাঁদের দাবি, শুধুমাত্র আশ্বাস নয়, প্রয়োজন দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের।

এই ঘটনা আবারও রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলির জরাজীর্ণ পরিকাঠামো এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার চিত্র তুলে ধরল। প্রশ্ন উঠছে, বড়সড় দুর্ঘটনার জন্য কি কেবল অপেক্ষা করা হবে? পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে রাজ্য সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই ধসে পড়া ছাদ কেবল একটি স্কুলবাড়ির জীর্ণ দশার প্রতীক নয়, এটি রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবহেলারও এক করুণ প্রতিচ্ছবি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy