বড়দিনে রাজকীয় সাজে ‘সাহেববাড়ি’! দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই প্রাচীন গির্জার ইতিহাস আজও রোমাঞ্চ জাগায়

বড়দিনের আনন্দ আরও কিছুটা বাড়িয়ে নিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের ‘সাহেববাড়ি’ পর্যটকদের কাছে এক অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। ২৫ ডিসেম্বর উপলক্ষ্যে অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে ঐতিহাসিক ‘খাড়ি প্যারিসের স্বর্গারোহণ গির্জা’। এক সপ্তাহব্যাপী চলা এই বিশেষ উৎসবে মেতেছে গোটা এলাকা। এই গির্জার পরতে পরতে মিশে আছে ব্রিটিশ আমলের ইতিহাস ও সাহেবদের ফেলে যাওয়া সংস্কৃতির গন্ধ।

কেন একে সাহেববাড়ি বলা হয়? ইতিহাস বলছে, ব্রিটিশ আমলে এই অঞ্চল ছিল গভীর জঙ্গল। পরবর্তীকালে জঙ্গল পরিষ্কার করা শুরু হলে কিছু ইংরেজ পরিবার এখানে বসতি স্থাপন করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের ‘সাহেব’ বলে ডাকতেন, আর সেই থেকেই এলাকার নাম হয়ে যায় ‘সাহেববাড়ি’। ইংরেজরা দেশ ছেড়ে চলে গেলেও তাঁদের তৈরি নজরকাড়া গির্জাটি আজও দাঁড়িয়ে আছে। এই গির্জার মূল আকর্ষণ হলো একটি বিশালাকার ঘণ্টা, যা খোদ ইংরেজরা তৈরি করেছিলেন।

পর্যটকদের জন্য কী কী রয়েছে? বড়দিন উপলক্ষ্যে এখানে এক সপ্তাহ ধরে মেলা চলে, যা দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম বড় ‘খ্রিস্ট মেলা’ হিসেবে পরিচিত। বড়দিনের দিন প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষের সমাগম হয় এখানে। গির্জা সংলগ্ন সাজানো বাগান, নজরকাড়া বড় ঘণ্টা এবং মনোরম পরিবেশ মন জয় করে নেয় দর্শকদের। ছোটদের জন্য রয়েছে একটি বড় পার্ক, যা বর্তমানে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।

কীভাবে পৌঁছাবেন? কলকাতা বা সংলগ্ন এলাকা থেকে এখানে আসা অত্যন্ত সহজ। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেনে চেপে নামতে হবে মথুরাপুর স্টেশনে। সেখান থেকে বাস অথবা অটোতে করে সরাসরি পৌঁছানো যায় সাহেববাড়ি। ট্রেন ভাড়া মাত্র ২০ টাকা এবং স্টেশন থেকে অটো বা বাসে যাতায়াতের খরচ পড়বে ৩০ টাকার মতো। ২৫ ডিসেম্বর সারা দিন এই গির্জা সবার জন্য খোলা থাকে। তবে বছরের অন্যান্য সময় গির্জার ভেতরে সব সময় প্রবেশাধিকার না থাকলেও আশেপাশের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy