বড়দিনে উপচে পড়া ভিড় ‘বাঁকুড়ার রানি’-তে! মুকুটমণিপুরের জল-জঙ্গলে পর্যটকদের মেলা

কনকনে ঠান্ডা আর উৎসবের মেজাজ—সব মিলিয়ে ২৫শে ডিসেম্বরের সকালে বড়দিনের আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা বাংলা। আর এই বিশেষ দিনে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির অন্যতম প্রধান গন্তব্য হয়ে উঠেছে ‘বাঁকুড়ার রানি’ মুকুটমণিপুর। কংসাবতী ও কুমারী নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রে সকাল থেকেই পর্যটকদের ঢল নেমেছে। কেউ এসেছেন সপরিবারে পিকনিক করতে, কেউ আবার নিছক প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করতে।

শীতের মিঠে রোদ আর জলাধারের নীল জলরাশির টানে মুকুটমণিপুরে এখন সাজ সাজ রব। পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ নৌবিহার বা বোটিং। সকাল থেকেই কংসাবতীর বুকে নৌকা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাঝিরা। হুগলি থেকে আসা এক পর্যটক বৈশাখী ঘোষের কথায়, “প্রথমবার মুকুটমণিপুরে এলাম, দারুণ লাগছে। সকালে খুব ঠান্ডা থাকলেও বেলার দিকে রোদ ওঠায় পরিবেশ বেশ মনোরম। আমরা সবাই মিলে পিকনিক করছি, এরপর নৌবিহারে যাব।” শিশুদের কলকাকলি আর চড়ুইভাতির ধোঁয়ায় মুকুটমণিপুর যেন এক উৎসবের প্রাঙ্গণে পরিণত হয়েছে।

তবে আনন্দের মাঝে কিছুটা বিষাদের সুর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের গলায়। ব্যবসায়ী হোসেন আলির দাবি, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম। ফলে নৌচালক থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের রুটিরুজিতে টান পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন এবছর ভিড় তুলনামূলক কম, তা নিয়ে চিন্তিত স্থানীয় মহল।

অন্যদিকে, বড়দিনের ভিড়ে পথ দুর্ঘটনা রুখতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের আওতায় অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ৬০-এ জাতীয় সড়কে রাতে পর্যটকবাহী বাস থামিয়ে চালক ও খালাসিদের চা-বিস্কুট খাওয়ানো হচ্ছে, যাতে ক্লান্তিতে চালকের চোখ লেগে না যায়। ডিএসপি (ট্রাফিক) কৈলাসপতি মাহাতো জানান, দুর্ঘটনা এড়াতে এই সচেতনতামূলক কর্মসূচি লাগাতার চলবে। সব মিলিয়ে আনন্দ আর নিরাপত্তার কড়াকড়িতে জমজমাট বড়দিনের মুকুটমণিপুর।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy