ভারত তার সামরিক শক্তি প্রদর্শনে এক নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছে। ২০২৫ সালের শেষ লগ্নে এসে বঙ্গোপসাগর অঞ্চলে একের পর এক শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সম্প্রতি জারি করা সরকারি বিজ্ঞপ্তি (NOTAM) অনুযায়ী, বড়দিন অর্থাৎ ২৫ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে মাঝসমুদ্রে একটি বড় মাপের নৌ-ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো হতে পারে।
প্রতিরক্ষা সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিশাখাপত্তনমে ভারতীয় নৌবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অধীনে থাকা কোনো যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হবে। এই পরীক্ষার জন্য প্রায় ৬৮০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ এই নির্দিষ্ট সময়ে ওই আকাশসীমা বা সমুদ্রপথ দিয়ে কোনো বিমান বা জাহাজ চলাচল করতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৫ ডিসেম্বর রাত ১:৩০ টা থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৭:৩০ টা পর্যন্ত চলবে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী এলাকাগুলোকেও এই সতর্কবার্তার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা ভারতের কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে এখানেই শেষ নয়। বঙ্গোপসাগরের পর ওড়িশার চাঁদিপুর থেকেও একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি তুঙ্গে। ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ (ITR) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে ৩ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে ১৮০ থেকে ৪০০ কিলোমিটার পাল্লার আরও একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হবে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, একের পর এক এই পরীক্ষাগুলি ভারতের দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নিখুঁত কার্যকারিতা নিশ্চিত করার একটি অংশ। বিশেষ করে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আধিপত্য বজায় রাখতে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান সামরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এই নৌ-মহড়া অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বছর শেষে ভারতের এই ‘মিসাইল পাওয়ার’ প্রদর্শন বিশ্বের দরবারে দেশটির সামরিক শ্রেষ্ঠত্বকেই ফের প্রমাণ করবে।