আলিগড়ে টিভিএস বাইক শোরুমের মালিক অভিষেক গুপ্তা খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন মূল অভিযুক্ত মহন্ত পূজা শকুন পাণ্ডে। একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শিরোনামে থাকা এই ধর্মগুরুকে দীর্ঘ তল্লাশির পর রাজস্থানের ভরতপুর থেকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
অভিযোগ, নিজের প্রেমিককে খুন করার জন্য তিন লাখ টাকার ‘সুপারি’ দিয়েছিলেন পূজা শকুন পাণ্ডে।
কীভাবে পালালেন মহন্ত?
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৬ সেপ্টেম্বর অভিষেক গুপ্তাকে হত্যার পর থেকেই পূজা শকুন পাণ্ডে ফেরার ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের পর তিনি বোরখা পরে আলিগড় থেকে প্রথমে গাজিয়াবাদ এবং সেখান থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত পালিয়ে যান। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ পাঁচ রাজ্যে তার সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছিল। বিশেষ করে, হরিদ্বারের আশেপাশে নিশ্ছিদ্র নজরদারি চালানো হয়। শেষ পর্যন্ত গোপন খবরের ভিত্তিতে রাজস্থানের ভরতপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পূজা শকুন পাণ্ডের বিতর্কিত অতীত:
পূজা শকুন পাণ্ডে নিরঞ্জনী আখড়ার মহন্ত ছিলেন। একসময় তিনি হিন্দু মহাসভার সঙ্গেও যুক্ত হন এবং তাঁর উস্কানিমূলক বক্তব্যের কারণে বহুবার শিরোনামে এসেছেন। ২০২১ সালে তিনি ‘মহন্ত’ উপাধি লাভ করেন। আলিগড় হত্যাকাণ্ডের পর তিনি হরিদ্বারে লুকিয়ে থাকতে পারেন এমন খবর ছড়িয়েছিল।
আখাড়া পরিষদের চরম পদক্ষেপ:
এই ঘটনা প্রসঙ্গে অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদের সভাপতি মহন্ত রবীন্দ্র পুরী মন্তব্য করেছেন, “পূজা আমাদের কাছ থেকে সমস্ত তথ্য গোপন করেছিলেন। আমরা অবিলম্বে তাঁকে তাঁর পদ থেকে বহিষ্কার করেছি। এই ঘটনার পর আখাড়া পরিষদ দ্রুত বড় কোনো সিদ্ধান্ত নেবে।”
অপরাধের রেকর্ড:
পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, পূজা শকুন পাণ্ডের বিরুদ্ধে আগে থেকেই বিভিন্ন ধারায় মোট ছ’টি ফৌজদারি মামলা দায়ের আছে। এই খুনের মামলায় তার স্বামী অশোক কুমার পাণ্ডে, এবং অন্যান্য দুই অভিযুক্ত মো ফজল ও আসিফকে পুলিশ আগেই গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে।
প্রেমিক খুনের এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মহন্তের গ্রেফতারি গোটা দেশে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। পুলিশ এবার পুরো ষড়যন্ত্রের পর্দা ফাঁস করতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।