প্রাক্তন রাজ্যপাল ও বিজেপি নেতার কড়া প্রতিক্রিয়া, মিনি পাকিস্তান’ বিতর্কের রেশ

পশ্চিমবঙ্গের ঢাকুরিয়া এলাকায় একদল মুসলিম মেয়ের হাতে হিন্দু মেয়েদের হেনস্তার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে নেটদুনিয়ায়। ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় এবং বিজেপি মুখপাত্র দেবজিৎ সরকার। এই ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।

তথাগত রায়ের কঠোর বার্তা:

প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় তাঁর এক্স (আগের টুইটার) বার্তায় ভাইরাল ভিডিওটি শেয়ার করে কঠোর ভাষায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, “মন দিয়ে গোটা ভিডিওটা দেখুন। নিজের প্রাণ, সম্মান ও সর্বোপরি হিন্দুসত্তা বাঁচাবার জন্য ঘৃণা করতে শিখতে হবে। কম্যুনিস্টরা শ্রেণিঘৃণা শেখায়, মুসলমানেরা কাফের (মূর্তিপূজক) ও মুশরিকদের (যারা মনে করে আল্লা ছাড়াও উপাস্য আছে) প্রতি তীব্র ঘৃণা শেখায়। প্রতিঘৃণা দিয়েই এর মোকাবিলা করতে হবে, গেঁদোর নপুংসক অহিংসা দিয়ে নয়।” তাঁর এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

দেবজিৎ সরকারের ‘মিনি পাকিস্তান’ অভিযোগ:

বিজেপি মুখপাত্র দেবজিৎ সরকারও এই ভিডিওটি সংযুক্ত করে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতিকে ‘মিনি পাকিস্তান’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “টিএমসির অধীনে মিনি পাকিস্তানে আপনাকে স্বাগতম, ঠিক যেমন কলকাতার মেয়র সতর্ক করেছিলেন—মিনি পাকিস্তান তৈরি হচ্ছে, অর্ধেক রাজ্য উর্দুতে কথা বলছে। গত সন্ধ্যায় ঢাকুরিয়ায়, এক মেয়ে সরাসরি এর মুখোমুখি হয়েছিল—একটি প্রকাশ্য স্থানে উচ্চস্বরে ধর্মীয় (জিহাদি) স্লোগানের প্রতিবাদ করার জন্য জিহাদিদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল।” দেবজিৎ সরকারের এই মন্তব্য রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছে।

ঘটনার বিবরণ:

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ঢাকুরিয়ার একটি প্রকাশ্য স্থানে একদল মুসলিম মেয়ে কিছু হিন্দু মেয়েকে হেনস্থা করছে। অভিযোগ উঠেছে, হিন্দু মেয়েরা প্রকাশ্য স্থানে উচ্চস্বরে ধর্মীয় (জিহাদি) স্লোগানের প্রতিবাদ করায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ভিডিওটির সত্যতা এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এখনও পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

এই ঘটনা আবারও রাজ্যের ধর্মীয় মেরুকরণ এবং সামাজিক সম্প্রীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং এই ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ কী, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy