প্রবীণ নাগরিকদের রেল ভাড়ায় ছাড় কি ফিরছে? সংসদে যেকথা জানালেন রেলমন্ত্রী

করোনা মহামারীর সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রবীণ নাগরিকদের জন্য রেলের টিকিটের ছাড় ফের চালু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব শুক্রবার রাজ্যসভায় জানিয়েছেন যে রেলওয়ের স্থায়ী কমিটি স্লিপার এবং থার্ড এসি শ্রেণিতে এই ছাড় পুনরায় শুরু করার সুপারিশ করেছে। এই ঘোষণা প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে, কারণ দীর্ঘ দিন ধরে এই ছাড় পুনর্বহালের দাবি উঠছিল।

২০২০ সালের মার্চ মাসের আগে পর্যন্ত, ৬০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা রেল টিকিটে ৪০ শতাংশ এবং ৫৮ বছরের বেশি বয়সী মহিলারা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পেতেন। মেল, এক্সপ্রেস, এবং রাজধানী সহ সমস্ত ট্রেনে এই সুবিধা পাওয়া যেত। তবে, করোনা মহামারীর কারণে এই সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং তারপর থেকে তা আর চালু হয়নি। প্রবীণ নাগরিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন মহল থেকে এই ভর্তুকি পুনরায় শুরু করার জন্য বারবার প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল। এবার সেই প্রশ্নই উঠল সংসদে।

রেলমন্ত্রীর আশ্বাস:
রাজ্যসভার সাংসদরা যখন প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ছাড় কবে ফের চালু হবে জানতে চান, তখন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান যে রেলওয়ের স্থায়ী কমিটি বিশেষ করে স্লিপার এবং থার্ড এসি শ্রেণিতে এই ছাড় পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে। তিনি বলেন, “রেলওয়ের স্থায়ী কমিটি পরামর্শ দিয়েছে যে বয়স্ক নাগরিকদের জন্য ভাড়ায় ছাড় অন্তত স্লিপার এবং থার্ড এসিতে পুনর্বিবেচনা করা উচিত।”

আগে কী ধরনের ছাড় ছিল?
কোভিড মহামারীর আগে, ভারতীয় রেল প্রবীণ পুরুষ যাত্রীদের জন্য ৪০ শতাংশ এবং প্রবীণ মহিলা যাত্রীদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দিত। এটি রেলভ্রমণকে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছিল।

রেলের বর্তমান অবস্থান:
রেলমন্ত্রী বৈষ্ণব আরও বলেন যে ভারতীয় রেলওয়ে ইতিমধ্যেই সমস্ত যাত্রীকে গড়ে ৪৫ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে। অর্থাৎ, ১০০ টাকার ভ্রমণ খরচের মধ্যে যাত্রীদের থেকে গড়ে ৫৫ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, ক্যান্সার এবং অন্যান্য গুরুতর রোগের রোগী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ছাড় এখনও চালু আছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে রেল সর্বদা সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সচেষ্ট।

সরকার এখনও প্রবীণ নাগরিকদের ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি, তবে পর্যালোচনার বিষয়টি উল্লেখ করে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে প্রবীণ যাত্রীরা আবারও রেলভ্রমণে স্বস্তি পেতে পারেন। এই পদক্ষেপ যদি বাস্তবায়িত হয়, তবে তা প্রবীণ নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করবে এবং তাদের রেলভ্রমণ আরও সহজ ও সাশ্রয়ী করবে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy