দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার সরকারি বাংলো থেকে বিপুল পরিমাণ পোড়া টাকা উদ্ধারের ঘটনায় অবশেষে তাঁর বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হলো। মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এই প্রক্রিয়া তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি, হাইকোর্টের একজন প্রধান বিচারপতি এবং একজন সিনিয়র আইনজীবীকে নিয়ে তিন সদস্যের একটি প্যানেল গঠনের ঘোষণা করেছেন। এই পদক্ষেপ সংবিধানের ১২৪(৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে।
গত ২২ মার্চ বিচারপতি যশবন্ত ভার্মার সরকারি বাংলোতে আগুন লাগে। দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে গিয়ে সেখান থেকে প্রচুর পরিমাণে পোড়া টাকা উদ্ধার করেন, যা নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এই ঘটনার পর শাসক ও বিরোধী দলের সাংসদদের একাংশ বিচারপতিকে ইমপিচ করার জন্য সোচ্চার হন।
লোকসভা স্পিকারের গঠিত এই প্যানেলে রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরবিন্দ কুমার, মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মণিন্দর মোহন এবং সিনিয়র আইনজীবী বিভি আচার্য। এই কমিটি বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবে এবং তাদের রিপোর্ট স্পিকারের কাছে জমা দেবে। কমিটির কাছে প্রমাণ তলব এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার ক্ষমতা থাকবে।
সংবিধানের নিয়ম অনুযায়ী, যদি এই কমিটি তদন্তের পর বিচারপতিকে দোষী সাব্যস্ত করে, তাহলে প্রথম রিপোর্টটি সংসদে গৃহীত হবে। এরপর সংসদের দুই কক্ষে ভোটাভুটির জন্য প্রস্তাব পেশ করা হবে। যেহেতু বিচারপতি ভার্মার ইমপিচমেন্টের বিষয়ে শাসক জোট এবং বিরোধী দল উভয়েই একমত, তাই এই প্রক্রিয়াটি মসৃণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বিচারপতি ভার্মাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং তাঁর অপসারণের সুপারিশ তৎকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছিল। বিচারপতি ভার্মা এই অভ্যন্তরীণ রিপোর্টকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেও শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে দেয়। এরপরই তাঁর ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হলো সংসদে। এই ঘটনা বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা নিয়ে এক বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং এর ফলে দেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা কতটা থাকে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।