জঙ্গলমহলের পুরুলিয়া জেলার অর্থনীতিতে বিড়ি শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে। ঝালদা, কোটশিলা, আড়সা এবং জয়পুরের মতো ব্লকগুলিতে বিপুল পরিমাণে বিড়ি তৈরি হয় এবং বহু শ্রমিক এই শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন শ্রমনীতি এই বিড়ি শ্রমিকদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে।
নতুন শ্রমনীতিতে বড় পরিবর্তন
কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন শ্রম নীতিতে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে:
-
নির্দিষ্ট কাজের সময়: শ্রমিকদের কাজের সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
-
বেতন ও ওভারটাইম: সঠিক সময়ে বেতন প্রদান এবং ওভারটাইমের (Overtime) ক্ষেত্রেও সুবিধার কথা বলা হয়েছে।
-
ন্যূনতম মজুরি: বিড়ি শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
নতুন এই আইন চালু হলে তাঁদের জীবন-জীবিকায় বড়সড় পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের প্রতিক্রিয়া ও প্রত্যাশা
এই বিষয়ে বিড়ি শ্রমিক ধীরেন রজক ও অঞ্জনা রজক বলেন, নতুন শ্রম আইন লাগু হলে তাঁদের অনেকটাই উপকার হবে। বিড়ি বেঁধেই তাঁদের জীবন চলে, কিন্তু অনেক সময় ধার-দেনা করতে হয়। তাঁরা মনে করেন:
“নতুন এই আইন যদি চালু হয়, তাহলে আর্থিকভাবে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব। আমাদের পক্ষে এই আইন হিতকর হবে।”
তাঁদের বিশ্বাস, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে আর্থিক সমস্যা দূর হবে এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।
আর্থ-সামাজিক অবদানে বিড়ি শিল্প
কেন্দু পাতা দিয়ে বিড়ি তৈরি এবং সরবরাহের উপর নির্ভরশীল এই শিল্পটি স্থানীয় অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিশেষত, এই জেলার বহু মহিলা এই শিল্পের উপর নির্ভর করেই পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন। ঝালদায় কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগেই তাঁদের জন্য বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালও গড়ে উঠেছে। এখন নতুন শ্রম আইনে কিছুটা হলেও আশ্বস্ত হচ্ছেন জঙ্গলমহলের বিড়ি শ্রমিকেরা।