দুর্গাপুজোর শেষ দিনে উৎসবের আমেজে জল ঢেলে দিল প্রকৃতি। দশমীর দুপুর নাগাদ হঠাৎ করেই কালো মেঘে ঢেকে যায় শহর কলকাতা। এরপর ঝেঁপে নামে মুষলধারে বৃষ্টি, সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ ও দমকা হাওয়া। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপই এই ঝড়-বৃষ্টির মূল কারণ। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দুপুর থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি প্রায় সারা দিন চলতে পারে কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে।
নিম্নচাপের অবস্থান ও প্রভাব
বর্তমানে নিম্নচাপটি ওড়িশার গোপালপুর উপকূল থেকে প্রায় ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। এর প্রভাবে শুধু কলকাতা নয়, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। কয়েক দিন আগেই রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছিল কলকাতার বহু এলাকা। তাই এদিনের বৃষ্টির পরও কিছু নিচু জায়গায় জল জমার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, বজ্রপাতের সময় সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
একাদশী পর্যন্ত দুর্যোগ, জারি কমলা সতর্কতা
নবমীর রাত থেকেই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ইঙ্গিত মিলছিল। সকাল থেকে আকাশ মেঘলা থাকলেও দুপুর ১২টা নাগাদ প্রবল বর্ষণ শুরু হয়। আবহাওয়ার এই চোখরাঙানি দশমীর উৎসবের আনন্দে ভাটা ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আয়োজক ও দর্শনার্থীরা। তাই যারা ঠাকুর দেখতে বের হচ্ছেন, তাঁদের ছাতা ও প্রয়োজনীয় সাবধানতা সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, একাদশী ও তার পরবর্তী দিনগুলোতেও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত ঝড়-বৃষ্টি চলতে পারে। ইতিমধ্যেই হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম-সহ একাধিক জেলায় কমলা সতর্কতা (Orange Alert) জারি করা হয়েছে। শুক্রবার পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমানে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
বলা যায়, দুর্গাপুজোর শেষ দিনে দক্ষিণবঙ্গবাসীর উৎসবের রঙ কার্যত ম্লান করে দিয়েছে নিম্নচাপের এই দাপট।