কসবা ল’কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিন খারিজের আবেদন জানিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন নির্যাতিতা তরুণী। পুজোর ছুটিতে অবকাশকালীন বেঞ্চে এই অভিযুক্ত জামিন পাওয়ায় আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মঙ্গলবার বিচারপতি চৈতালী চট্টোপাধ্যায় দাসের এজলাসে মামলা দায়েরের অনুমতি পেয়েছেন নির্যাতিতার আইনজীবীরা। এই সপ্তাহেই মামলার শুনানি হতে পারে।
পুজোর ছুটিতে জামিন, তাই বিতর্ক
নির্যাতিতার পক্ষে আইনজীবী ঝুমা সেন আদালতে সওয়াল করেন যে, অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন এর আগে নিম্ন আদালত থেকে তিন বার খারিজ হয়েছিল।
আইনজীবী বলেন, “রাজ্যের সব আদালতে পুজোর ছুটি চলছিল। সেই সময় ১৩ অক্টোবর আলিপুর আদালতের পূজা অবকাশকালীন বেঞ্চে আবেদন করে অভিযুক্ত জামিন পেয়েছে। এই নির্দেশ যথাযথ নয়, তাই আমরা এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়েরের অনুমতি চেয়েছি।”
জানা যায়, ২০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর জামিন মঞ্জুর করেছিল নিম্ন আদালত। সেখানে দাবি করা হয়েছিল, গণধর্ষণের ঘটনায় সরাসরি যোগ না থাকায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তারক্ষীর ভূমিকা ছিল ‘মদতকারীর’
এই জামিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার মূল কারণ হলো অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা। গত ২৫ জুন এই ঘটনাটি ঘটেছিল তাঁরই গার্ডরুমে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, ঘটনার সময় তিনি পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সাহায্য করা তো দূর, গার্ডরুম ছেড়ে চলে যান।
তদন্তে জানা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি অভিযুক্তদের বাধা দেননি। উল্টে কলেজের প্রভাবশালী তৃণমূল ছাত্র নেতা ও প্রাক্তন ছাত্র মনোজিৎ মিশ্র (মূল অভিযুক্ত) এবং অন্য দুই অভিযুক্তকে ‘মদতকারী’ ভূমিকা নিয়েছিলেন।
নির্যাতিতার আবেগপূর্ণ বার্তা
এই পরিস্থিতিতে অভিযুক্তের জামিনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আসায়, সুবিচার পাওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতা।
এদিন নির্যাতিতা বলেন, “আমি ন্যায় বিচার চাই। আমার আদালত ও সংবিধানের উপর ভরসা আছে।”
এখন দেখার, পুজোর ছুটিতে নিম্ন আদালতের দেওয়া বিতর্কিত জামিন কলকাতা হাইকোর্টে বহাল থাকে, নাকি তা খারিজ হয়ে যায়।