বাংলার রাজনীতিতে সংঘাত এখন উৎসবের ময়দানেও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবার জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে যেতে চেয়ে সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লোকসভা কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারের মন্দিরতলা ও আমতলায় তাঁর পুজো উদ্বোধনে যোগ দেওয়ার কথা। এই সফর ঘিরেই ফের একবার উত্তাল রাজ্য রাজনীতি।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানানোর পর বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ কড়া নির্দেশ দিয়ে জানান, বিরোধী দলনেতার এই সফরে রাজ্য প্রশাসনকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ, আদালত অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পরোক্ষভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করল।
আদালতের রায়ে তুঙ্গে রাজনীতি
আদালতের এই রায় প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপি নেতা তমোঘ্ন ঘোষ সরাসরি শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, “বাংলায় যে আইনের শাসন নেই, আদালতের এই নির্দেশই তার প্রমাণ।” তিনি অভিযোগ করেন, “শুধু মুখেই বলে ধর্ম যার যার, উৎসব সবার, কিন্তু বাস্তবে চলছে গুন্ডারাজ। এখন পুজোয় যেতে গেলেও আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বিরোধী দলনেতাকে!”
তাঁর আরও কড়া মন্তব্য, “তৃণমূল পুলিশকে পার্টি ক্যাডারে পরিণত করেছে। বাংলায় এখন গুন্ডা-মস্তানের রাজত্ব চলছে। এমনকি মা কালীও এদের অত্যাচার থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।”
অন্যদিকে, শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই বিতর্ক নিয়ে খুব বেশি মুখ খুলতে নারাজ। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ঘটনাটিকে লঘু করার চেষ্টা করে বলেন, “উনি তো কথায় কথায় কোর্টে যান। তবে ঘটনাটা ঠিক কী, তা না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।”
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকায় শুভেন্দু অধিকারীর এই সফর এবং তা ঘিরে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া রাজ্যের রাজনৈতিক সংঘাতকে আরও এক ধাপ উসকে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।