উত্তরবঙ্গের সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই পাহাড়ে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার তিনি মিরিকে না গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত সুখিয়াপোখরিতে পৌঁছেছেন ত্রাণ তুলে দিতে। এই বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের এক জনকে হোমগার্ডে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
জিটিএ-র প্রাথমিক রিপোর্ট: ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৯৫০ কোটি টাকা
বিপর্যয়ে পাহাড়ে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। সূত্রের খবর, জিটিএ চিফ এক্সিকিউটিভ অনীত থাপা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে ৯৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তুলে দেবেন।
ভোটের মুখে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে
রাজ্যে ইতিমধ্যেই ভোটার তালিকা সংশোধনের (SIR) প্রস্তুতি তুঙ্গে। কমিশন সূত্রে খবর, SIR মিটলেই তিন মাসের মধ্যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফর ঘিরে রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে।
রাজনৈতিক সমীকরণ: পাহাড়ের তিনটি বিধানসভা আসনের মধ্যে শুধুমাত্র কালিম্পং রয়েছে অনীত থাপার দলের দখলে। বাকি দুটি আসন— দার্জিলিং এবং কার্শিয়াং— এখনও গেরুয়া শিবিরের শক্ত ঘাঁটি।
বিশেষ বৈঠক? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অতীতেও মুখ্যমন্ত্রী যখনই পাহাড়ে এসেছেন, একাধিক রাজনৈতিক বৈঠক করেছেন, যার জেরে পরবর্তীতে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। দুয়ারে ভোট থাকায় নেত্রী এদিন পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করেন কিনা, সেদিকেই নজর রয়েছে সবার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিপর্যয়ের মধ্যে পাহাড়বাসীর পাশে থেকে, কাছে থেকে মনবল বৃদ্ধির মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুটা হলেও কঠিন পথ মসৃণ করার চেষ্টা করছেন। বুধবারও মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে থাকবেন এবং বৃহস্পতিবার আরও একটি রিভিউ মিটিং করে ফিরে আসবেন।
রাজ্যজুড়ে তৈরি হচ্ছে বিশেষ ত্রাণ তহবিল
এদিকে, উত্তরবঙ্গের বিপর্যয়ের পর রাজ্য সরকার একটি ত্রাণ তহবিল গড়ছে। যেকোনো ব্যক্তি নিজের সামর্থ্য মতো অর্থ সাহায্য করতে পারবেন। সূত্রের খবর, এই তহবিল কেবল উত্তরবঙ্গের জন্য নয়, বরং রাজ্যের যে কোনো বিপর্যয় মোকাবিলায় এর জমা টাকা ব্যবহার করা হবে। শীঘ্রই তহবিলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও অন্যান্য তথ্য প্রকাশ করা হবে।