পানিহাটি নির্যাতন: নির্যাতিতা যুবতীর অবস্থা আশঙ্কাজনক, আইসিসিইউতে করা হলো স্থানান্তর

পানিহাটির নির্যাতিতা যুবতীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রের খবর, সাগর দত্ত হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে তাঁর চিকিৎসা চলছিল, সেখান থেকে তাঁকে আইসিসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওই যুবতীর মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে খবর, যা তাঁর বর্তমান আশঙ্কাজনক অবস্থার অন্যতম কারণ।

পানিহাটির ওই যুবতীকে হাওড়ার বাঁকড়ার একটি ফ্ল্যাটে আটকে রেখে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে শ্বেতা খান ওরফে ফুলটুসি এবং তাঁর পুত্র আরিয়ান খানের বিরুদ্ধে। পর্নোগ্রাফিকাণ্ডে অভিযুক্ত এই মা ও ছেলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, নির্যাতিতাকে কুলু এবং মানালিতেও নিয়ে গিয়েছিল শ্বেতা। শ্বেতার ২ বছরের একটি সন্তানও রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পর্নোগ্রাফি শ্যুট করতে রাজি না হওয়ায় পানিহাটির এই যুবতীর উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়।

প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, নির্যাতিতাকে দিয়ে শ্বেতা তাঁর সন্তানের দেখভাল করাতো, সেই কারণেই নাকি তাঁকে কুলু ও মানালিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য ছিল পর্নোগ্রাফিতে বাধ্য করা। অভিযোগ, শ্বেতা নিজেই পানিহাটির যুবতীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। কোনোক্রমে শ্বেতাদের খপ্পর থেকে পালিয়ে আসেন পানিহাটির ওই যুবতী, কিন্তু শারীরিক ও মানসিক ভাবে তিনি চরম বিপর্যয়ের শিকার।

প্রতিবেশীর উদ্বেগ ও শারীরিক অবনতি:

নির্যাতিতার এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, “ওই যুবতীকে প্রথমে সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিসিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁর পেটেও সমস্যা রয়েছে বলে জানা গেছে।” ওই প্রতিবেশী আরও জানিয়েছেন, নির্যাতিতা যুবতী মানসিক ভাবেও ভীষণ ভেঙে পড়েছেন, যা তাঁর শারীরিক সুস্থতার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘ফুলটুসি’র অন্ধকার অতীত:

শ্বেতা ওরফে ফুলটুসির প্রাক্তন স্বামীর চাঞ্চল্যকর দাবি সামনে এসেছে। তিনি বলেছেন, শ্বশুরবাড়িতে স্বামীর উপস্থিতিতেই শ্বেতা অন্য পুরুষ বন্ধুদের ডেকে এনে ‘ফূর্তি’ করত। প্রাক্তন স্বামীর অভিযোগ, “হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্বশুরের বাড়ির দলিল নিয়ে নিজের নামে সম্পত্তি লিখিয়ে নেয় শ্বেতা। আমাদের গোটা পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে।” এই তথ্য শ্বেতার ক্রিমিনাল অতীত এবং প্রতারণামূলক আচরণের উপর আলোকপাত করছে।

পুলিশি তৎপরতা ও পলাতক অভিযুক্তরা:

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, যুবতী নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত মা এবং ছেলে – শ্বেতা খান ও আরিয়ান খান – এখনও ফেরার। তাদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। এই ঘটনা গোটা এলাকায় চরম চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং নির্যাতিতার দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন এলাকাবাসী। পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের দিকে এখন সবার নজর।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy