নবরাত্রি এবং দুর্গাপূজার আবহের মধ্যেই ‘আই লাভ মহম্মদ’ প্ল্যাকার্ড বিতর্কে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের একাধিক রাজ্য। হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাতের অভিযোগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ফের যখন আঙুল উঠেছে, ঠিক তখনই এই প্রসঙ্গে বিজেপি-আরএসএসকে তীব্র ভাষায় বিঁধলেন এআইএমআইএম (AIMIM) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।
ওয়েইসির কড়া বার্তা
এদিন ওয়েইসি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ভারতের কোনও নির্দিষ্ট ধর্ম নেই। সংবিধানও তাই বলে।” তিনি মনে করিয়ে দেন, এই দেশে সকল ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রয়েছে এবং প্রত্যেক জাতি এখানে গর্বের সঙ্গে বসবাস করে।
গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে ওয়েইসি বলেন, আরএসএস-বিজেপি মনে করে ভারতের একটাই ধর্ম। তাঁর মতে, মুসলিমদের কাছে নবী মহম্মদ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, এবং সংবিধানের আর্টিকেল ২৫ এই ধর্মীয় স্বাধীনতা দেয়। তিনি আগেও তোপ দেগেছিলেন যে, গেরুয়া শিবির নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে এই ইস্যু তৈরি করে মুসলিম সম্প্রদায়কে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।
উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার একাধিক
উত্তরপ্রদেশে শুরু হওয়া এই বিতর্কের আঁচ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারের মতো একাধিক রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
বারেলির ঘটনা: সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের বারেলিতে সংঘর্ষের অভিযোগে মঙ্গলবার মৌলানা মহসিন রাজাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবারের নামাজের পর বারেলির আলা হজরত দরগা এবং ইত্তেহাদ মিলাত কাউন্সিলের প্রধান মৌলানা তৌকার রাজা খানের বাড়ির সামনে “আই লাভ মহম্মদ” প্ল্যাকার্ড নিয়ে জমায়েত থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত হয়। অভিযোগ, উন্মত্ত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি শুরু করে।
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ: বারেলি পুলিশের ডিআইজি অজয় কুমার সাহানি বলেন, মূল ষড়যন্ত্রকারী মৌলানা তৌকার রাজাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং রীতিমতো ষড়যন্ত্র করে বিভিন্ন রাজ্যে ‘আই লাভ মহম্মদ’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। প্রমাণ সাপেক্ষে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং মহারাষ্ট্র থেকেও একাধিক বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে খবর।
যোগী আদিত্যনাথের হুঁশিয়ারি
ঘটনার তীব্র নিন্দা করে আগেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বলেছিলেন, “যারা এইভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরা নিজেরাই নিজেদের ধর্মকে ছোট করছেন।” যোগী মনে করেন, কিছু মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছোট বাচ্চাদের হাতে প্ল্যাকার্ড ধরিয়ে সমাজে হিংসা ও বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছেন।