অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ডোমজুড়ের তথাকথিত ‘পর্ন সম্রাজ্ঞী’ ফুলটুসি ওরফে শ্বেতা খান। বুধবার সকালে তাঁর ছেলে আরিয়ান খানকে গল্ফগ্রিন থেকে গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আলিপুরের এক গোপন আস্তানা থেকে পাকড়াও করা হয়েছে শ্বেতাকে। সোদপুরের এক তরুণীকে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত মা ও ছেলেকে এবার মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করবে হাওড়া সিটি পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই শ্বেতা খান ও তাঁর ছেলে আরিয়ানের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। কিন্তু তারা বারবারই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছিলেন। অবশেষে আরিয়ানের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে বুধবার সকালে কলকাতার গল্ফগ্রিন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আরিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ শ্বেতা খান ওরফে ফুলটুসির আলিপুরের গোপন আস্তানার হদিশ পায় এবং সেখান থেকেই বুধবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার করে। শ্বেতার কাছ থেকে নগদ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে, যদিও টাকার অঙ্ক এখনো জানা যায়নি।
গত সপ্তাহে সোদপুরের এক তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। ওই তরুণী দাবি করেন, শ্বেতা ও আরিয়ান তাকে ভালো কাজের টোপ দিয়ে নিয়ে গিয়ে বারে নাচতে বাধ্য করেন। এতে রাজি না হওয়ায় তার উপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়। বর্তমানে সাগর দত্ত হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই তরুণী। তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলে জানা গেছে। এই অভিযোগের সূত্র ধরেই শ্বেতা-আরিয়ানের পর্ন ছবির কারবারের বিষয়টি সামনে আসে।
আরিয়ান ও শ্বেতার পাশাপাশি, পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও কয়েকজনকে আটক করেছে। বুধবার সকালেই আরিয়ানের দিদা অর্থাৎ শ্বেতার মাকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এছাড়া, আরিয়ানের সহযোগী জোয়া নামে এক ব্যক্তিকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল, শ্বেতা খান কলকাতার বাইরে পালিয়ে যাননি, বরং শহরের কোথাও গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। ছেলে ও মায়ের জিজ্ঞাসাবাদেই ফুলটুসির খোঁজ পাওয়ার বিষয়ে পুলিশ আশাবাদী ছিল। জানা গেছে, শ্বেতা আলিপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে বাইরে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার ছক কষছিলেন, কিন্তু তার আগেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার শ্বেতা খান ওরফে ফুলটুসি বেগমকে হাওড়া আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ আশা করছে, মা ও ছেলেকে মুখোমুখি জেরা করে সোদপুরের তরুণী নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি চক্রের বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসবে। এই ঘটনা রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
