আসন্ন দুর্গাপূজার আগেই এক মানবিক মুখ দেখালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভিনরাজ্যে হেনস্তার শিকার হয়ে রাজ্যে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বিশেষভাবে আর্জি জানালেন যে, দুর্গাপূজার এই মহা-উৎসবে যেন এই শ্রমিক পরিবারগুলোকেও শামিল করা হয় এবং সম্ভব হলে তাঁদেরও নতুন জামাকাপড় দেওয়া হয়।
সম্প্রতি দিল্লি সহ একাধিক রাজ্যে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ ঘিরে রাজ্যজুড়ে উত্তাল রাজনীতি চলছে। বিরোধীরা যখন এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে কেবলমাত্র রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ না রেখে এটিকে মানবিকতার প্রশ্ন হিসেবে তুলে ধরেছেন বলে অনেকেই মনে করছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তাঁরা যদি ফিরতে চান তাঁদের নিয়ে আসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার।” শুধু তাই নয়, তিনি এও জানান যে, তাঁদের ‘কর্মশ্রী’ প্রকল্পে যুক্ত করা হবে এবং জব কার্ড ও স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও দেওয়া হবে।
এই প্রেক্ষিতেই তিনি রাজ্যের পুজো উদ্যোক্তাদের প্রতি একটি বিশেষ বার্তা দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যাঁরা ফিরে এসেছেন তাঁদের মধ্যে অনেকেই খুব খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাঁরা যাতে অন্তত এই পুজোয় একটা নতুন জামাকাপড় পরে হাসতে পারেন, সেটা ভাবার বার্তা দেন।” মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট কথায়, “ওঁদের নতুন জামা কাপড় দিন।”
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন যে, ফিরে আসা শ্রমিকদের খাদ্য, বাসস্থান ও কর্মসংস্থান – এই তিনটি দিকেই জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন চায় যে, তাঁদের জীবনে ফের আশার আলো জ্বলুক। মুখ্যমন্ত্রী এই বার্তার মধ্য দিয়ে বোঝাতে চাইলেন যে, দুর্গাপূজা কেবল ভক্তি বা আনন্দের সময় নয়, বরং একসাথে থাকার এবং একে অপরের পাশে দাঁড়ানোরও সময়। তাঁর অনুরোধ, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের দিনগুলোতে যেন পরিযায়ী শ্রমিকদের মুখেও হাসি ফুটে ওঠে। এমন একটি মানবিক আবেদন রাজ্যের সামগ্রিক রাজনৈতিক-সামাজিক প্রেক্ষাপটে একটি উল্লেখযোগ্য বার্তা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।