পরমাণু শক্তিতে বড় বিপ্লব! লোকসভায় পাশ ঐতিহাসিক ‘SHANTI’ বিল, জেনেনিন বিস্তারিত

ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে এবং পরমাণু শক্তি উৎপাদনে গতি আনতে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র সরকার। বুধবার লোকসভায় পাশ হয়ে গেল ‘SHANTI’ (Sustainable Harnessing and Advancement of Nuclear Energy for Transforming India) বিল ২০২৫। এর ফলে ভারতের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলির অংশগ্রহণের পথ আরও প্রশস্ত হলো।

কেন এই নতুন বিল? এতদিন পরমাণু বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে বেসরকারি সংস্থাগুলি ভয় পাচ্ছিল। এর প্রধান কারণ ছিল ‘সিভিল লায়াবিলিটি’ বা কড়া দায়বদ্ধতার আইন। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণ এবং আইনি জটিলতার ভয়ে সংস্থাগুলি পিছিয়ে যেত। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং সংসদে জানান, সংস্থাগুলির সেই ভয় কাটাতেই এই নতুন আইন আনা হয়েছে।

নতুন আইনের বিশেষ দিক:

সরলীকরণ: যদি ভবিষ্যতে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তবে সরকার সরাসরি বিদ্যুৎ পরিচালনাকারী সংস্থার (Operator) সঙ্গে কথা বলবে।

সুরক্ষা: যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী সংস্থাগুলিকে (Suppliers) আলাদা করে দায়ী করা হবে না। এর ফলে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তির সংস্থাগুলি ভারতে কাজ করতে উৎসাহিত হবে।

ক্ষতিপূরণ: দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করার একাধিক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশাপাশি সরকারও প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।

২০৪৭-এর ব্লু-প্রিন্ট: সরকারের লক্ষ্য হলো ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেওয়া। যাতে পরিবেশবান্ধব এবং পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সারা দেশে সরবরাহ করা যায়।

বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদ: তবে এই বিল পাশের সময় সংসদে তীব্র হট্টগোল শুরু করে বিরোধী দলগুলি। তাদের আশঙ্কা, এই আইনের ফলে বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। যদিও সরকারের দাবি, নিরাপত্তা ও নজরদারির সম্পূর্ণ রাশ থাকবে সরকারের হাতেই। বিরোধীদের প্রতিবাদের মধ্যেই সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান তাঁরা, তবে শেষ পর্যন্ত কণ্ঠভোটে বিলটি পাশ হয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy