রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান রেল স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনার পর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে। সপ্তাহের প্রথম অফিস দিনে ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে হাঁটার সময় আরপিএফ-এর হঠাৎ ব্যস্ততা দেখে তীক্ষ্ণ টিপ্পনি ছুঁড়ে দিলেন এক নিত্যযাত্রী। তিনি বলেন, “এখন ঘনঘন মাইকিং, এতদিন কি ঘুমোচ্ছিলেন, নাকি মোবাইলে রিলস দেখতে ব্যস্ত থাকতেন?” আরেক যাত্রী ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “পদপিষ্ঠ, মৃত্যু না হলে আপনাদের কী টনক নড়ে না? এখন আর বাঁশি ফুঁকে কি হবে!”
যাত্রীদের অভিযোগ, প্রতিদিন লক্ষাধিক যাত্রী এই স্টেশন ব্যবহার করেন এবং রেলের কোটি কোটি টাকা আয় হয়। অথচ যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
ডিআরএম-কে চিঠি পরামর্শদাতা কমিটির:
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের ডিআরএম-এর কাছে চিঠি লিখেছেন রেলের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য আব্দুল মালেক। তিনি চিঠিতে বর্ধমান স্টেশনকে ‘রাজ্যের অন্যতম ব্যস্ততম রেলওয়ে জংশন’ উল্লেখ করে যাত্রীদের ভিড়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
আব্দুল মালেক-এর মূল দাবিগুলি হলো:
১. সেতুর সম্প্রসারণ: প্ল্যাটফর্ম ৪ এবং ৫-এ থাকা ফুট ওভারব্রিজগুলি বর্তমান যাত্রী চাপ সামলানোর পক্ষে যথেষ্ট নয়। দ্রুত এই সেতুগুলিকে শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করা হোক এবং যাত্রী চলাচলের সুবিধার জন্য সমান্তরাল ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হোক।
২. এসকেলেটর মেরামত: অনেক এসকেলেটর বিকল হয়ে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সেগুলিকে মেরামত করে চালু করা দরকার। দীর্ঘদিন এসকেলেটর ব্যবহার না করার ফলে যাত্রীদের ভিড় এবং অসুবিধা আরও বাড়ে।
তিনি দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করেছেন, এই পদক্ষেপগুলি দ্রুত নিলে শুধু যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে তা নয়, এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তিও আটকানো সম্ভব হবে।
স্টেশন ম্যানেজারের কাছে ডেপুটেশন:
এদিকে, রবিবারের পদপিষ্টের ঘটনার প্রতিবাদে এদিন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র পক্ষ থেকে বর্ধমান স্টেশনে অবস্থান বিক্ষোভ করা হয়। পরে তাঁরা স্টেশন ম্যানেজারের কাছে একটি ডেপুটেশনও জমা দেন। আইএনটিইউসি নেতা গৌরব সমাদ্দার অভিযোগ করেন, বারবার রেলের গাফিলতিতে যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, কিন্তু তার পরেও রেল কর্তৃপক্ষের হুঁশ ফিরছে না।