মুম্বইয়ের পাওয়াইয়ে ঘটে যাওয়া নাটকীয় পণবন্দি ঘটনার নেপথ্যে উঠে এলো এক দীর্ঘদিনের আর্থিক টানাপোড়েন এবং প্রতিবেশীদের অভিযোগের কাহিনি। পুলিশের গুলিতে নিহত অভিনেতা ও মিডিয়া উদ্যোক্তা রোহিত আর্যর (Rohit Arya) জীবন ঘিরে ছিল এক জটিল ভাড়াবিরোধ।
পুলিশি তদন্তে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২৮ অক্টোবর রোহিতের স্ত্রী অঞ্জলি আর্যের নামে কথরুদের শিবতীর্থ নগরের একটি ফ্ল্যাটে ৩৬ মাসের ভাড়া চুক্তি সই হয়। ফ্ল্যাটটির মালিক ছিলেন দেশপান্ডে। কিন্তু সেই ফ্ল্যাটে ওঠার পর থেকেই প্রতিবেশীরা রোহিত দম্পতির ‘অশালীন আচরণ’ নিয়ে অভিযোগ জানাতে শুরু করেন। এই অভিযোগের ভিত্তিতেই বাড়ির মালিক এক মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট খালি করার নোটিস দেন।
রোহিত শুধু নির্দেশ মানেননি তাই নয়, তিনি ভাড়া দেওয়াও বন্ধ করে দেন। বাধ্য হয়ে মালিক ২০২৫ সালের ২ মার্চ আইনি নোটিস পাঠান। তখন রোহিত পাল্টা দাবি করেন, ফ্ল্যাট ছাড়ার জন্য তাঁকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে! যদিও শেষ পর্যন্ত মালিক ১.৭৫ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হন এবং স্ট্যাম্প পেপারে চুক্তিও হয়, কিন্তু তবুও রোহিত-অঞ্জলি দম্পতি মে মাস পর্যন্ত ফ্ল্যাট ছাড়েননি। অবশেষে পুলিশি হস্তক্ষেপে তাঁরা ফ্ল্যাট খালি করেন।
পণবন্দি কাণ্ডের দিন: ফ্ল্যাট-বিবাদের কয়েক মাস পরই আসে সেই ভয়াবহ দিন—৩০ অক্টোবর। পাওয়াইয়ের স্টুডিওতে ১৭টি শিশু ও ২ জন প্রাপ্তবয়স্ককে ‘অডিশন’-এর নাম করে আটকে রাখেন রোহিত। দু’ ঘণ্টা ধরে চলে টানটান উত্তেজনা। পুলিশি অভিযানের পর গুলিতে আহত হন রোহিত এবং পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
যদিও রোহিতের মৃত্যুর পর এক ভিডিওতে তিনি দাবি করেন, মহারাষ্ট্র শিক্ষা দফতরের এক প্রকল্পের টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন, তবে রাজ্য সরকার সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনা স্পষ্ট করে দিলো যে, রোহিতের জীবনের চরম আর্থিক অস্থিরতা এবং বিবাদগুলোই হয়তো তাঁকে এই পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছিল।