রাষ্ট্রীয় কূটনীতি হলো সুযোগকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করার কৌশল। ঠিক তখনই যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ‘গাজা শান্তি পরিকল্পনা’ সামনে আসে, ভারত একে নিজেদের কূটনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করার এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে দেখছে। এটি কোনো স্বার্থপরতা নয়, বরং একে ‘রিয়েলপলিটিক’ (Realpolitik) বা প্রকৃত রাজনীতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
ভারত-মার্কিন সম্পর্কের স্থবিরতা কাটাতে মোক্ষম চাল
ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা এমন একটি প্রস্তাব, যা ভারতকে প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি খোলামেলা প্রশংসা ও সমর্থন জানানোর একটি বিরল সুযোগ দিয়েছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, ভারত এই সুযোগকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমানে যখন ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কিছুটা স্থবিরতার মুখোমুখি, তখন এমন একটি শক্তিশালী কূটনৈতিক পদক্ষেপ সেই সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে এবং নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম। মোদি সরকার মনে করে, এই ধরনের কূটনৈতিক গেম খেলা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
ট্রাম্পের ‘নোবেল মিশন’ ও ভারতের লাভ
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার দুই বছর পর ট্রাম্প তাঁর এই “চুক্তি” ঘোষণা করেছেন, যা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের অবসানের রোডম্যাপ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। ট্রাম্প নিজে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে নোবেল শান্তি পুরস্কার অর্জনের একটি মিশনে রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন।
এটি একটি অস্থির অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা, যেখানে ভারত নিরব থাকার বদলে ট্রাম্পকে সমর্থন জানিয়ে কূটনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। এই সমর্থন বিশ্ব মঞ্চে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে তুলে ধরতে পারে এবং ভারতের আন্তর্জাতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারে।
মোদী সরকারের কৌশলগত পররাষ্ট্রনীতি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর কূটনৈতিক দক্ষতার প্রমাণ এর আগেও বহুবার দিয়েছেন, বিশেষ করে যখন বিশ্বব্যাপী ভারতে দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল। ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা সম্পর্কে মোদি সরকারের ইতিবাচক মনোভাব তারই প্রতিফলন।
মোদি সরকারের পররাষ্ট্রনীতি নিঃসন্দেহে কৌশলী এবং গঠনমূলক, যা ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য লাভজনক হতে পারে। এই সুযোগটিকে পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে পারলে, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।