আরজি কর হাসপাতালে নার্সিংয়ের ছাত্রী নির্যাতিতার বাবা-মায়ের নেতৃত্বে শনিবার এক বিশাল মিছিল নবান্নের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। এই মিছিলে হাজার হাজার মানুষ যোগ দেন। শহরের নিরাপত্তা ভেদ করে মিছিলটি এগিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষের পর পুলিশের বিরুদ্ধে মিছিলকারীদের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে, যেখানে নির্যাতিতার বাবা-মাও আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।
নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। নির্যাতিতার মা দাবি করেন, পার্ক স্ট্রিট এলাকায় পুলিশ তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করে। তিনি বলেন, “আমার শাখা ভেঙে দেওয়া হয়েছে, মাথায় আঘাত করা হয়েছে এবং পিঠেও মারা হয়েছে।” তার বাবাও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “পুলিশ আমাদের উপর লাঠিচার্জ করেছে।” এই ঘটনার পর নির্যাতিতার মা-কে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর মাথায় ও পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
তবে, কলকাতা পুলিশ এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। কলকাতা পুলিশের ডিসি পোর্ট, হরিকৃষ্ণ পাই, বলেন, “এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুলিশের তরফে নির্যাতিতার বাবা-মাকে কোনো শারীরিক নিগ্রহ করা হয়নি।” তিনি আরও জানান, পুলিশের সঙ্গে তাঁদের কোনো ধস্তাধস্তি হয়নি।
প্রতিরোধ এবং দৃঢ়তা
মিছিল রুখতে কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ শহরজুড়ে ব্যারিকেড তৈরি করে। তা সত্ত্বেও, আন্দোলনকারীরা এই বাধা ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। নির্যাতিতার মা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, “আমি অনড়। নবান্নে যেতেই চাই। কেন পুলিশ তখন তৎপর ছিল না যখন আমার মেয়েকে খুন করা হলো?” তিনি আরও বলেন, “যদি পুলিশ ব্যারিকেড না সরায়, আমি ব্যারিকেডের উপর দিয়ে নবান্নে পৌঁছব।”
এই ঘটনায় নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে নির্যাতিতার বাবা-মা পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতি পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলছে, যেখানে একটি তরফ শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করছে এবং অন্য তরফ তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে।