আনন্দ, উৎসবের বিজয়া দশমীর সকাল থেকেই মুখভার ছিল আকাশের। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসকে সত্যি করে বৃহস্পতিবার বেলার দিকেই বৃষ্টিতে ভিজল দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপের জেরে এই দুর্যোগের ঘনঘটা। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই বৃষ্টি থেকে এখনই রেহাই মিলছে না। বরং আগামী রবিবার (৫ অক্টোবর) পর্যন্ত এই দুর্যোগের জের চলবে।
নিম্নচাপের অবস্থান ও গতিপথ
আবহাওয়া দফতরের বিশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, পশ্চিম-মধ্য ও তৎসংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। এটি আজ দশমীর রাতেই ওড়িশা ও সংলগ্ন অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল দিয়ে গোপালপুর ও পারাদ্বীপের মধ্যবর্তী অঞ্চলে স্থলভাগ অতিক্রম করতে পারে। নিম্নচাপটি বঙ্গ উপকূল থেকে দূরে সরলেও এর পরোক্ষ প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিমুখর দিন দেখা যাচ্ছে।
কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলিতে দফায় দফায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়ে চলেছে, যা স্বাভাবিকভাবেই পুজো আয়োজকদের বিড়ম্বনায় ফেলেছে।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আবহাওয়া পূর্বাভাস
তারিখ সতর্কতা ও জেলা
২ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার (দশমী) ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (কমলা সতর্কতা): দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। ভারী বৃষ্টি: হাওড়া ও কলকাতা (৭-১১ সেমি)। অন্যান্য জেলায়ও ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা। দমকা হাওয়া: দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরে ৪০-৫০ কিমি বেগে।
৩ অক্টোবর, শুক্রবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি (কমলা সতর্কতা): বীরভূম। ভারী বৃষ্টি: দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমান ও বাঁকুড়া। দমকা হাওয়া: দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও দুই মেদিনীপুরে ৪০-৫০ কিমি বেগে।
৪ অক্টোবর, শনিবার সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির (৭-১১ সেমি) সম্ভাবনা।
৫ অক্টোবর, রবিবার সব জেলায় বৃষ্টির পূর্বাভাস। বজ্রপাত-সহ ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে।
৬ অক্টোবর, সোমবার সব জেলায় বৃষ্টি। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনায় বজ্রপাত-সহ ৩০-৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া।
Export to Sheets
উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগের পূর্বাভাস
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি চলবে।
আজ (২ অক্টোবর): সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, দু-একটি জেলায় ভারী বৃষ্টি (৭-১১ সেমি)।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) থেকে রবিবার (৫ অক্টোবর): দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং ও কোচবিহারে অতি ভারী বৃষ্টির (কমলা সতর্কতা) সম্ভাবনা।
সার্বিক আবহাওয়ার এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েকদিন বিসর্জন ও পুজোর পরবর্তী আনন্দ কিছুটা হলেও ব্যাহত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।