নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ ও খুনের অপরাধে বাবার ফাঁসির আদেশ

নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ ও খুনের মতো নৃশংস অপরাধের দায়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে আসানসোলের পকসো আদালত। বুধবার বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় ঘোষণা করেন, যা সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। মাত্র ১৫ মাসের মধ্যেই এই মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে, যা ন্যায়বিচারের একটি দ্রুত এবং দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ।

ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২০২৪ সালের মে মাসে। ১৩ই মে সকালে হীরাপুর থানা এলাকার এক কিশোরীর মৃতদেহ তার নিজের বিছানায় পাওয়া যায়। কিশোরীর মা সকালে উঠে দেখেন, তার মেয়ের নাক ও কান থেকে রক্ত বের হচ্ছে এবং গলায় কালশিটে দাগ রয়েছে। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, তাকে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় মৃতার মা তার স্বামী, অর্থাৎ কিশোরীর বাবার বিরুদ্ধে হীরাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, ওই ব্যক্তি তার মেয়েকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে সেই দড়িও উদ্ধার করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় অভিযুক্তের সঙ্গে কিশোরীর যৌনাঙ্গে পাওয়া নমুনার মিল পাওয়া যায়, যা ধর্ষণের প্রমাণ হিসেবে আদালতে পেশ করা হয়।

আদালতে মোট ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয় এবং সব প্রমাণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা হয়। বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় তার রায়ে বলেন, “পিতার এই নৃশংস অপরাধ সমাজের সকল নৈতিক ও আইনি সীমা লঙ্ঘন করেছে।” তিনি এই জঘন্য অপরাধের জন্য অভিযুক্তকে সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ ফাঁসির আদেশ দেন। একই সঙ্গে, আদালত মৃত কিশোরীর পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই রায় সমাজে শিশু ও নারী নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াবে বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy