নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে খুনের মতো ‘বিরলতম অপরাধের’ ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত বাবাকে ফাঁসির সাজা শোনাল আসানসোলের বিশেষ পকসো আদালত। বুধবার বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রায় ঘোষণা করেন, যা আসানসোল আদালতের ইতিহাসে প্রথম ফাঁসির সাজা বলে আইনজীবীদের অভিমত।
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২৪ সালের ১৩ মে। আসানসোলের হীরাপুর থানার নরসিংবাঁধ এলাকায় নিজ বাড়িতে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার মা দেখেন, কিশোরীর চোখ, কান ও নাক দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তবে, কিশোরীর বাবার নির্লিপ্ত আচরণ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করে। এরপরই কিশোরীর মা হীরাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং পুলিশ অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেফতার করে।
সরকার পক্ষের আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়, কিশোরীকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল এবং খুনের আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়, কিশোরীর যৌনাঙ্গে এবং বিছানার চাদরে পাওয়া ডিএনএ নমুনা বাবার ডিএনএ-এর সঙ্গে মিলে যায়। এছাড়া, খুনে ব্যবহৃত দড়িটিও বাড়ির পাশে একটি ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার করা হয়।
এই মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সমস্ত প্রমাণ ও সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচারক বাবাকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং বুধবার তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ফাঁসির সাজা শোনান। বিচারক সুপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনাকে ‘বিরলতম অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। একই সঙ্গে নির্যাতিতার মাকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত। মাত্র এক বছর তিন মাসের মধ্যে এই মামলার রায় ঘোষণা হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বলে মনে করা হচ্ছে।