দুর্নীতি রুখতে গিয়ে নয়, বরং ঘুষের বিনিময়ে মামলা ধামাচাপা দিতে গিয়ে এবার সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হলেন পঞ্জাব পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসার। রোপার রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (DIG) পদে কর্মরত হরচরণ সিং ভুল্লারকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করেছে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (CBI)।
এই আইপিএস অফিসারকে গ্রেফতারের পর তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধার হয়েছে, তাতে তদন্তকারীদের মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড়!
ঘুষ নিতে গিয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার
২০০৯ ব্যাচের আইপিএস অফিসার হরচরণ সিং ভুল্লার এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চলা ক্রিমিনাল কেস ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ঘুষ চেয়েছিলেন।
অভিযোগ: ব্যবসায়ী আকাশ বাট্টাকে ডিআইজি ভুল্লার হুমকি দিয়েছিলেন যে, প্রথমে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ এবং পরে মাসিক কিস্তিতে আরও টাকা না দিলে তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে।
ফাঁদ: আকাশ বাট্টার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআই তদন্ত শুরু করে এবং চণ্ডীগঢ়ের সেক্টর ২১-এ ফাঁদ পাতে। ঘুষের টাকা নিতে এসে ডিআইজি-র মিডলম্যান কৃষ্ণা হাতেনাতে গ্রেফতার হন।
গ্রেফতার: এরপর সিবিআই টিম ডিআইজি ভুল্লারের মোহালির অফিসে পৌঁছয় এবং তাঁকে গ্রেফতার করে।
আইপিএস অফিসারের বাড়িতে ‘কুবেরের ভাণ্ডার’
গ্রেফতারের পর সিবিআই ডিআইজি ভুল্লারের মোহালি, রোপার ও চণ্ডীগঢ়ের একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালায়। যা উদ্ধার হয়, তার তালিকা চোখ কপালে তোলার মতো:
নগদ টাকা: প্রায় ৫ কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে (টাকা গোনা চলছিল)।
সোনা: প্রায় দেড় কেজি সোনার গহনা।
বিলাসবহুল জিনিস: মার্সিডিজ ও অডি-র মতো লাক্সারি গাড়ি, ২২টি দামি ঘড়ি, ও ৪০ লিটার বিদেশি মদ।
আগ্নেয়াস্ত্র: শটগান, পিস্তল, রিভলভার, এয়ারগান-সহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র।
এছাড়া, মিডলম্যান কৃষ্ণার বাড়ি থেকেও নগদ ২১ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ, শুক্রবার অভিযুক্ত আইপিএস অফিসার ও তাঁর মিডলম্যানকে বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হবে। সিবিআই জানিয়েছে, এখনও তল্লাশি চলছে এবং আর্থিক তছরুপের আরও তথ্য সামনে আসতে পারে।
প্রসঙ্গত, হরচরণ সিং ভুল্লার পাটিয়ালা রেঞ্জের ডিআইজি, মোহালি, সাঙ্গুর-সহ একাধিক জেলার এসপি ও ভিজিল্যান্স ব্যুরোর জয়েন্ট ডিরেক্টর পদে ছিলেন। ২০২১ সালে তিনি শিরোমণি অকালি দলের নেতা বিক্রম সিং মাজিথার বিরুদ্ধে মাদক পাচার মামলার তদন্তেও নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।