ভারত-বিরোধী আস্ফালন করলেও নিজের দেশেই চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। পাকিস্তানের উত্তরাংশের পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে শুরু করে বালুচিস্তান পর্যন্ত সাধারণ মানুষ পাক সরকারের হাত থেকে মুক্তির দাবি জানাচ্ছে। বালুচিস্তানে খাদ্যসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি এখন আকাশছোঁয়া এবং চরম দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আটার দাম ভারতে দ্বিগুণ!
বালুচিস্তানে বর্তমানে খাদ্যসামগ্রীর সরবরাহ, ব্যবস্থাপনা এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে।
আটার দাম: জানা গিয়েছে, ২০ কিলো আটার প্যাকেটের দাম পৌঁছেছে ২৩০০ পাকিস্তানি রুপিতে, অর্থাৎ কেজি প্রতি আটার দাম ১১৫ পাকিস্তানি রুপি।
তুলনা: এই দাম ভারতের বর্তমান আটার দামের প্রায় দ্বিগুণ। এর ফলে বালুচিস্তানে রুটি খাওয়া কার্যত বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কোয়েত্তা প্রদেশের একজন দোকানী জানান, “এক প্যাকেট আটার দাম ২০০ টাকা হবে কোনোদিন ভাবতে পারিনি। পরিবারগুলো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। এরকম চলতে থাকলে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে।”
দুর্নীতির অন্ধকার সত্য
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চরম অবস্থার পেছনে রয়েছে ঘোরতর দুর্নীতি।
গমের অপব্যবহার: সংবাদসংস্থার তথ্য অনুযায়ী, যখন মার্চ-এপ্রিলে গমের উৎপাদন বেশি থাকে এবং দাম কম থাকে, তখন প্রশাসন আটা তৈরি না করে প্রায় ৮ লক্ষ টন পুরনো গম বিক্রির দিকে বেশি নজর দেয়।
লোকসান: আধিকারিকদের মতে এই কাজের ফলে নষ্ট কম হয়, কিন্তু এর ফলে প্রায় ৬ বিলিয়ন পাকিস্তানী রুপীর লোকসান হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
দুর্নীতির তদন্ত: বালুচিস্তানের দুর্নীতি-দমন শাখা ঘটনার তদন্তে বিলিয়ন রুপীর দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন। গম উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়া ও বাজারজাত করার পুরো প্রক্রিয়াজুড়ে মুনাফাখোরদের দৌরাত্ম্য চলছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কা
বিগত কয়েক দশক ধরে বালুচিস্তানের প্রতি পাক-সরকারের ‘দুয়োরাণী’ সুলভ আচরণ এই সংকটের অন্যতম কারণ। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এমনিতেই উত্তপ্ত বালুচিস্তান বর্তমানে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেমেছে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (BLA)-এর নেতৃত্বে। এই চরম খাদ্যসংকট শাহবাজ শরিফের জন্য নতুন অস্বস্তি তৈরি করবে এবং মানুষ পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।