দুর্গাপুর কাণ্ডের পর ফের চর্চায় ‘অপরাজিতা বিল’! BJP সাংসদদের প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন জুন মালিয়া

বাংলা চলচ্চিত্র জগতের জনপ্রিয় মুখ এবং মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়া এবার বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে ছুড়ে দিলেন রাজ্যের নারী সুরক্ষা সংক্রান্ত বহুচর্চিত ‘অপরাজিতা বিল’-এর প্রসঙ্গ। প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে ‘হিমঘরে’ ঢুকে থাকা বিলটিকে ফের আলোচনায় এনেছেন তিনি।

বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের ক্ষীরপাই টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জুন মালিয়া। সেখানেই তিনি দুর্গাপুর কাণ্ড নিয়ে মুখ খুলে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা আরও পোক্ত করতে কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

‘অপরাজিতা বিল কেন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে?’
দুর্গাপুর কাণ্ডে ধৃতদের শাস্তি হবে বলে আশ্বাস দেওয়ার পরই জুন মালিয়া প্রশ্ন তোলেন, কঠোর আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেন বাধা দেওয়া হচ্ছে?

সাংসদ বলেন,

“যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁরা অবশ্যই শাস্তি পাবে। কিন্তু রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা আরও পোক্ত করতে কঠোর আইন প্রয়োজন। অপরাজিতা বিল তো আমরা (রাজ্য সরকার) পাশ করিয়ে দিয়েছি, তারপরেও কেন সেটাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে?”

তিনি সরাসরি রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন:

“বাংলায় বিজেপির যাঁরা সাংসদ রয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রে গিয়ে বলুন এই বিলটা পাশ করাতে। তা হলে বুঝব আপনারা সত্যিই বাংলা ও বাংলার মা-বোনেদের কতটা ভালোবাসেন।”

‘অপরাজিতা বিল’ কেন আটকে?
প্রসঙ্গত, আরজি করের ঘটনার সময় ধর্ষণের মতো মামলায় দ্রুত তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে ‘অপরাজিতা বিল’ নামে একটি নারী সুরক্ষা বিল বিধানসভায় এনেছিল রাজ্য সরকার। বিরোধীরা সমর্থন করায় বিলটি বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়।

কিন্তু রাজ্যপালের দপ্তর পেরিয়ে বিলটি যখন সম্মতির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়, তখন সেখানে গিয়ে তা আটকে যায়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বিলটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা রাজভবনে ফেরত পাঠিয়ে দেন।

অভিষেকের পর জুনের সরব হওয়া তাৎপর্যপূর্ণ
অপরাজিতা বিল নিয়ে জুন মালিয়া একা নন, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও দুর্গাপুর কাণ্ডের পর থেকে বারবার সরব হচ্ছেন। অভিষেক নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রশ্ন তুলেছিলেন, “এই ধরনের নৃশংস ঘটনার জন্য কঠোর আইন প্রয়োজন। কিন্তু সেই দায়িত্ব থেকে মোদী সরকার হাত গুটিয়ে নিয়েছে। অপরাজিতা বিল বিধানসভা থেকে পাশ হয়ে এক বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও, তা এখনও আইনে পরিণত হয়নি। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় তো?”

রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্গাপুর কাণ্ডের পর রাজ্যজুড়ে নারী নিরাপত্তা নিয়ে যে চাপ তৈরি হয়েছে, তাতে এই বক্তব্যগুলি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অপরাধ দমন ও নারী সুরক্ষায় কঠোর আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ফের সরব হয়ে রাজ্য সরকার এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy