গত তিন দিন ধরে দুর্গাপুরে মিনিবাস ও অটো চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রায় আড়াইশো মিনিবাস এবং দুই হাজারেরও বেশি অটো রাতারাতি উধাও হয়ে যাওয়ায় শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। আর এই অচলাবস্থার জন্য বাস ও অটো মালিকদের অভিযোগের মূল কারণ হলো টোটোর দৌরাত্ম্য।
বাস ও অটো মালিকদের অভিযোগ, কোনো রকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই টোটোগুলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায়ের ফলে বাসে ও অটোতে যাত্রী সংখ্যা ব্যাপক হারে কমে গিয়েছে। এর প্রতিবাদেই তারা গাড়ি চালানো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ক্ষুব্ধ অটো চালকরা জানিয়েছেন, গত দু’মাস আগে এই সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাদের দাবি, সেই আশ্বাসের পরেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। টোটোগুলি আগের মতোই অবাধে চলাচল করছে।
বাস ও অটো চালকদের আরও অভিযোগ, বেশিরভাগ টোটোর বৈধ লাইসেন্স নেই। তারপরও তারা নির্বিঘ্নে পরিষেবা চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ, তাদের সবরকম বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি, ট্যাক্স এবং অন্যান্য খরচ বাড়লেও যাত্রী সংখ্যা কমতে থাকায় তাদের পক্ষে পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে রুজি-রোজগার প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে, তাই বাধ্য হয়েই তারা এই ধর্মঘটের পথ বেছে নিয়েছেন।
এই সমস্যার সমাধান করতে দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বাস ও অটো সংগঠনের সঙ্গে একটি বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছিলেন। খবর অনুযায়ী, বুধবার এই দুই সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক হলেও কোনো রফাসূত্র মেলেনি। ফলে কবে এই অচলাবস্থা কাটবে, তা এখনও অনিশ্চিত। এমতাবস্থায় দুর্গাপুরের নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ ক্রমশ বেড়েই চলেছে।