দীপাবলি যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে বাজি নিয়ে উদ্বেগ। এবার সবুজ আতশবাজি (Green Firecrackers) কেনা আরও জটিল হয়ে পড়েছে, কারণ এতদিনকার QR কোড দিয়ে বৈধ বাজি শনাক্ত করার ব্যবস্থাটি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সাধারণ ক্রেতাদের জন্য আসল ‘সবুজ বাজি’ এবং নিষিদ্ধ ‘নকল বাজি’-র মধ্যে পার্থক্য করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশবিদদের আশঙ্কা, এই সুযোগে নিষিদ্ধ বাজি বাজারে ছেয়ে যেতে পারে, যা আসন্ন কালীপুজোয় রাজ্যে দূষণের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে।
QR কোড কেন বাতিল? NEERI কী জানাল?
ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট (NEERI)-এর বিজ্ঞানী ডঃ আরজে কৃপদম জানিয়েছেন, QR কোড ব্যবস্থাটি খুব কার্যকর ছিল, কিন্তু কিছু অবৈধ প্রস্তুতকারক এর অপব্যবহার শুরু করায় এটি বাতিল করা হয়েছে।
এখন শুধুমাত্র NEERI-নিবন্ধিত ১,৪০৩টি প্রস্তুতকারক সংস্থা সবুজ আতশবাজি তৈরি করতে পারবে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নিবন্ধিত ইউনিটের সংখ্যা হলো ১৯৯টি।
বৈধ সবুজ বাজি চেনার একমাত্র উপায়
QR কোড বাতিল হওয়ার পর এখন বৈধ সবুজ বাজি চেনার একমাত্র উপায় হলো: বিক্রেতার কাছ থেকে সেই বাজিটি NEERI-নিবন্ধিত প্রস্তুতকারকের তৈরি কিনা তা নিশ্চিত করা।
ক্রেতাদের জন্য নির্দেশিকা:
১,৪০৩টি বৈধ প্রস্তুতকারকের অফিসিয়াল তালিকাটি NEERI-এর ওয়েবসাইটে (www.neeri.res.in) পাওয়া যাবে।
তালিকা দেখতে: ওয়েবসাইটের R&D Areas → Sustainable Environmental Processes → Climate Change and Green Material Option সেকশনটি খুলে “List of fireworks manufacturers with NEERI registered with 15 September 25” ফাইলটি দেখতে হবে।
পরিবেশবিদদের মতে, ক্রেতাদের পক্ষে এই বিশাল তালিকা মুখস্থ রাখা সম্ভব নয়। উৎপাদন ইউনিটগুলোর ওপর পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় নিষিদ্ধ বাজি সহজে বাজারে ঢুকে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
সবুজ বাজির বৈশিষ্ট্য ও বাজি বাজারের হাল
NEERI-এর মতে, সবুজ বাজি তৈরি হয় ছোট খোলস ও ছাই উৎপাদনকারী উপাদান বাদ দিয়ে। এটি ৩০% পর্যন্ত দূষণ কমায় এবং ধুলো-দমনকারী উপকরণ ব্যবহার করে নির্গমন নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতায় চারটি বড় বাজি মেলা আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে—শহীদ মিনার মাঠ, টালা পার্ক, বেহালা ব্লাইন্ড স্কুল মাঠ ও কালিকাপুর আগুয়ান সংঘ। মেলা চলবে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত।
রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, দীপাবলির দিন রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত—মাত্র দুই ঘণ্টা—সবুজ বাজি ফাটানোর অনুমতি থাকবে।