উৎসবের শেষ লগ্নে প্রকৃতিও যেন বেঁকে বসেছে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপ ক্রমেই শক্তি বাড়াচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে চলেছে। বৃহস্পতিবার (দশমী) দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে এটি ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছিল। এটি প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৮ কিমি বেগে উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছে।
আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী, আজ সন্ধ্যার মধ্যে এটি গোপালপুর সংলগ্ন ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
দক্ষিণবঙ্গে আজ থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা
নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের পরোক্ষ প্রভাবে আজ (২ অক্টোবর) থেকেই দক্ষিণবঙ্গে একাধিক জেলায় বৃষ্টির তীব্রতা বাড়বে। আবহাওয়া দফতর একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির (৭–২০ সেমি) পূর্বাভাস দিয়েছে:
আজ (দশমী): দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে বৃষ্টির তীব্রতা সবচেয়ে বেশি থাকবে। কলকাতা ও হাওড়াতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
৩ অক্টোবর (শুক্রবার): বীরভূম, দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।
৪ অক্টোবর (শনিবার): বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়তে পারে।
৫ থেকে ৮ অক্টোবর: এরপরও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
উত্তরবঙ্গেও চলবে দুর্যোগের দাপট
দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও বৃষ্টিপাত বাড়বে।
৩ থেকে ৫ অক্টোবর (শনি-রবিবার): দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই সময়ে বজ্রবিদ্যুৎ এবং ঝোড়ো হাওয়াও হতে পারে।
মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষের জন্য জরুরি সতর্কতা
নিম্নচাপ ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করলেও, এর প্রভাবে আগামী কয়েক দিন রাজ্যজুড়ে প্রতিকূল আবহাওয়া থাকবে। আবহাওয়া দফতর বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে:
সমুদ্রে নিষেধাজ্ঞা: উপকূলীয় এলাকার মৎস্যজীবীদের শুক্রবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
বজ্রপাত ও জল: বজ্রপাতের সময় গাছ বা বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে দাঁড়াবেন না এবং জমা জল এড়িয়ে চলুন।
বিসর্জনে সতর্কতা: পুজো উদ্যোক্তাদের বিসর্জনের সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
নিরাপদ আশ্রয়: স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে এবং সাধারণ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।