তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি এবার দলের প্রথম সারির নেতাদের মুখেই উঠে আসছে। রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের পর এবার দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সরব হলেন দমদমের সাংসদ সৌগত রায়। অন্যদিকে, বিজয়া সম্মিলনীতে কর্মী-সমর্থকদের অনুপস্থিতি দেখে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
সৌগত রায়ের বার্তা: দলকে দুর্বল করা চলবে না
গতকাল খড়দায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়ে কর্মীদের কড়া বার্তা দেন সৌগত রায়। তিনি বলেন:
“দলের মধ্যে মতভেদ থাকতেই পারে। কিন্তু মতভেদ প্রকাশ করতে গিয়ে দলকে দুর্বল করলে চলবে না। সামনে নির্বাচন। নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য কাজ করে যেতে হবে।”
তিনি কর্মীদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন।
শোভনদেবের হতাশা: ফাঁকা সভাকক্ষ
একই বিজয়া সম্মিলনীতে গিয়ে সভাকক্ষ ফাঁকা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন খড়দার তৃণমূল বিধায়ক ও মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দলীয় কর্মীদের আচরণে হতাশার সুর ছিল প্রবীণ বিধায়কের গলায়।
তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলে এখনও কড়া রোদের মধ্যে তিনি দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। অথচ এখানে চেয়ার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি সামলাতে সভাকক্ষে লোক ধরে রাখতে হলের দরজা বন্ধ করারও নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
তাপস চট্টোপাধ্যায়ের সতর্কবার্তা
এর আগে রাজারহাট-নিউটাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্য়ায়ও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন:
“দলে যদি শৃঙ্খলা না থাকে, তাহলে সেই দল এগোতে পারে না। দলে বন্ধুত্বপূর্ণ ঝগড়া হতেই পারে। কিন্তু বিজেপি বা বিরোধীদের সঙ্গে ঝগড়া কখনও বন্ধুত্বপূর্ণ হতে পারে না।”
যদিও বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য এই ধরনের বিবৃতিকে ‘প্রচার পাওয়ার চেষ্টা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং বলেছেন এর কোনো প্রভাব পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে নেই। তবে আসন্ন নির্বাচনের আগে দুই হেভিওয়েট নেতার মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্কবার্তা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের অভ্যন্তরে ক্রমবর্ধমান চাপকে ইঙ্গিত করছে।