পূর্ব রেলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় হিসেবে শিয়ালদা-রানাঘাট এসি লোকাল ট্রেনের যাত্রা শুরু হলেও, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ চরমে ওঠে। রবিবার এই ট্রেনের উদ্বোধনে অংশ নিতে এসে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। দমদম স্টেশনে দুই দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক বচসা ও হাতাহাতি হয়, যা পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তোলে।
প্রথম এসি লোকালটি শিয়ালদা থেকে রানাঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর বিজেপির সাংসদ সুকান্ত মজুমদার এবং জগন্নাথ সরকারসহ অন্যান্য নেতারা দমদম স্টেশনে নেমে যান। সেখানেই তাদের ঘিরে ইনটাক (INTTUC)-এর কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করেন। মূলত, সম্প্রতি বিতর্কিত ‘SIR’ মন্তব্যের বিরোধিতা এবং ‘বাঙালি অস্মিতা’য় আঘাতের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সংগঠিত করা হয়।
সুকান্ত মজুমদারকে ঘিরে স্লোগান শুরু হলে দ্রুত পরিস্থিতি রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দুই দলের কর্মী-সমর্থকরা একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করেন এবং তাদের মধ্যে হাতাহাতিও শুরু হয়। RPF-এর কর্মীরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মহিলাদের গায়ে হাত দেওয়া হয়েছে, হাত ধরে টানাটানি করা হয়েছে। সরকারি অনুষ্ঠানে তৃণমূলের গুন্ডারা তাণ্ডব চালিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এরা SIR-এর ভয়ে থরহরিকম্প হয়ে আছে। দম থাকলে আমাকে আটকে দেখাক।” তিনি অভিযোগ করেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের দালালরা শ্রমিক সেজে এখানে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল এবং শ্লীলতাহানিও করা হয়েছে। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে রেলমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দায়ের করা হবে বলেও তিনি জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের এমন উত্তপ্ত পরিবেশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। শিয়ালদা-রানাঘাট রুটের যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক পরিষেবা শুরু হলেও, রাজনীতির চাপানউতোর যে এই নতুন পরিষেবার উপরও প্রভাব ফেলছে, তা স্পষ্ট।