ত্রিকোণ প্রেমের বলি কলেজ ছাত্র! চেন্নাইয়ে রেঞ্জ রোভারের ধাক্কায় মৃত্যু, গ্রেফতার ৩, চিন্তায় ডিএমকে!

এক মর্মান্তিক ঘটনায় ত্রিকোণ প্রেমের শিকার হয়ে প্রাণ হারালেন ১৯ বছর বয়সী এক কলেজ ছাত্র। তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ির ধাক্কায় নীতীন সাই নামে ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। প্রাথমিকভাবে এটিকে নিছকই একটি দুর্ঘটনা মনে করা হলেও, পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর ত্রিকোণ প্রেমের কাহিনি, যার জেরে ইচ্ছাকৃতভাবে বাইকে ধাক্কা মারা হয়েছিল। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন ডিএমকে নেতার নাতিও রয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত:

পুলিশ সূত্রে খবর, গত সোমবার চেন্নাইয়ের রাস্তায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে। একটি রেঞ্জ রোভার গাড়ি একটি বাইকে ধাক্কা মারে, যার ফলস্বরূপ বাইকের পেছনে বসা নীতীন সাই ঘটনাস্থলেই গুরুতর আঘাত পেয়ে মারা যান। বাইক চালক অভিষেকও গুরুতর আহত হন।

তদন্তে নতুন মোড়: ত্রিকোণ প্রেম ও বিবাদ:

প্রাথমিক তদন্তে এটি দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও, পুলিশ যত গভীরে যায় ততই ভয়ংকর এক চিত্র উঠে আসে। তদন্তকারীরা জানান, দুই যুবক এবং এক ছাত্রীর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। এই বিবাদ দুই দল কলেজ পড়ুয়ার মধ্যে মারামারিতেও গড়িয়েছিল। এই বিবাদ মীমাংসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ‘চন্দ্রু’ নামে এক ছাত্রকে, যে কিনা চেন্নাইয়ের এক ডিএমকে নেতা ও কাউন্সিলরের নাতি।

পরিকল্পিত হামলা ও পরিণতি:

পুলিশের তদন্তে জানা যায়, চন্দ্রু একটি বিশেষ পক্ষকে সমর্থন করছিল এবং ওই রেঞ্জ রোভার গাড়িতে থাকা দলের সদস্য ছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল অন্য দলের সদস্যদের, বিশেষত ভেঙ্কটেসন এবং তার বন্ধুকে ব্যক্তিগতভাবে ভয় দেখানো। ভেঙ্কটেসন এবং তার বন্ধু অন্য একটি বাইকে দ্রুত পালিয়ে গেলেও, গাড়িটি নীতীন এবং অভিষেকের বাইককে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা মারে। যার ফলে নীতীনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।

গ্রেপ্তার ও তল্লাশি:

এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রেঞ্জ রোভার গাড়িতে থাকা চতুর্থ অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। নীতীনের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ডিএমকে-র অস্বস্তি:

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে অস্বস্তিতে পড়েছে। যদিও ডিএমকে দলের মুখপাত্র টিকেএস এলানগোভান দ্রুত এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগসূত্র অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, “এই ঘটনায় ধৃত অভিযুক্তদের অনেকেই বিজেপি এবং এআইএডিএমকে-র সদস্য। এটি একটি সামাজিক সমস্যা, রাজনৈতিক সমস্যা নয়।” তাঁর কথায়, “তারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে চায়। যদি আমরা বিজেপি এবং এআইএডিএমকে অপরাধীদের ছেড়ে দিই, তাহলে তারা খুশি হবে।”

এই ঘটনাটি আবারও শহর জীবনে কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যেকার সম্পর্কের জটিলতা এবং তার ভয়াবহ পরিণতিকে সামনে নিয়ে এসেছে। পুলিশ এই ঘটনার আরও গভীরে গিয়ে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy