ত্রাণের চালের গন্ধে বাড়ছে বিপদ! বন্যার পর নতুন আতঙ্ক ডুয়ার্সের নাগরাকাটায়, হাতির হানায় রাতভর পাহারা স্থানীয়দের

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকে এখন নতুন আতঙ্ক—হাতির হানা। দিনভর প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা করার পর রাত নামলেই চাল-ডালের গন্ধে লোকালয়ে ধেয়ে আসছে হাতির দল। প্রাণ ভয়ে নিদ্রাহীন রাত কাটছে টন্ডু ও বামনডাঙা চা-বাগান সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের।

ত্রাণের চালই বাড়াচ্ছে বিপদ:
বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যার জেরে ডায়না ও গরুমারা জঙ্গলের বহু বন্যপ্রাণী আশ্রয়ের সন্ধানে লোকালয়ে আসছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ত্রাণ শিবিরে রাখা চাল-ডালের তীব্র গন্ধে আকৃষ্ট হয়ে হাতির দল বারবার গ্রামে প্রবেশ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মণীশ টিগ্গা ও রাজেশ ওরাওঁ জানান, “ত্রাণের চাল-ডালের গন্ধেই হাতির দল আসে। আমরা বনদফতরের সঙ্গে মিলে রাতভর পাহারা দিচ্ছি। আগে বিদ্যুৎ না থাকায় ভয় বেশি ছিল, এখন কিছুটা আলো এসেছে, তাই আতঙ্কও কিছুটা কমেছে।”

বনদফতরের তৎপরতা:
মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও নাথুয়ার জঙ্গল থেকে একটি দাঁতাল হাতি গ্রামে ঢুকে পড়ে এবং তাড়াতে গেলে বনকর্মীদের দিকে তেড়ে আসে। পরে গরুমারার ডিএফও দ্বিজপ্রতিম সেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং বনকর্মীরা হাতিটিকে পুনরায় জঙ্গলে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হন।

ডিএফও বলেন, “বন্যার জেরে জঙ্গলের পশুরা বেশি করে বাইরে বেরিয়ে আসছে। গোটা জেলায় ৩০টি কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। টন্ডু ও বামনডাঙা এলাকায় চারটি টিম মোতায়েন রয়েছে।” পাশাপাশি, পরিস্থিতির মোকাবিলায় স্থানীয়দেরও দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে হাতি তাড়ানোর কাজে যুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

একদিকে ভয়াবহ বন্যা, অন্যদিকে বন্যপ্রাণীর হামলা—ডুয়ার্সের গ্রামগুলোতে এখন রাত মানেই আতঙ্ক ও নিদ্রাহীনতা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy