বর্ষার আগমন মানেই ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধস, আর ধস মানেই পাহাড় কেটে রাস্তা মেরামত—এই চক্রাকার সমস্যায় জর্জরিত শিলিগুড়ির স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু এবার এই সমস্যা তাদের মনে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কারণ, পাহাড় কাটতে কাটতে এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূগর্ভস্থ রেল প্রকল্পের টানেল ঝুঁকির মুখে পড়েছে। রাস্তা ও টানেলের মধ্যে দূরত্ব কমে মাত্র ১৬০ মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
বাসিন্দারা বলছেন, এই পরিস্থিতির জন্য প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষের কিছু ভুল সিদ্ধান্তও দায়ী। তিস্তা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি, পাহাড়ি অঞ্চলে নির্বিচারে নির্মাণকাজ এবং রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত মালবাহী ট্রাকের চলাচল—এগুলোই বারবার ধসের কারণ হচ্ছে। তারা অভিযোগ করছেন, কর্তৃপক্ষ এই সমস্যাগুলোকে সাময়িক মেরামতের মাধ্যমে এড়িয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিয়ে কোনো চিন্তা করছে না।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রতি বছর আমরা একই দুর্ভোগের শিকার হই। কিন্তু এবার পরিস্থিতি আরও জটিল। যদি রাস্তা আবার ধসে যায় এবং পাহাড় কাটতে হয়, তাহলে টানেলটির কী হবে? আমরা কি কোনো বড় দুর্ঘটনার অপেক্ষা করছি?” এই প্রশ্নটি এখন সকলের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
এলাকার মানুষের দাবি, সরকার এবং প্রশাসনকে এখন একযোগে একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজতে হবে। তিস্তা নদীর গতিপথ নিয়ন্ত্রণে আনা, অবৈধ নির্মাণ বন্ধ করা এবং ওভারলোডেড ট্রাকের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। তা না হলে জাতীয় সড়ক এবং রেল প্রকল্প উভয়ই বড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারে।