আসামের ডিব্রুগড়ে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় স্বামীকে খুনের অভিযোগে স্ত্রী, তার কিশোরী মেয়ে এবং আরও দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মৃত ব্যক্তির নাম উত্তম গগৈ। প্রাথমিকভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু এবং ডাকাতির মিথ্যা গল্প ফেঁদেছিল স্ত্রী, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাজানো চিত্রনাট্য ফাঁস হয়ে গেল। এই ঘটনা স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৫ জুলাই ডিব্রুগড়ের লাহোন গাঁওয়ের নিজ বাড়ি থেকে উত্তম গগৈয়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পর মৃতের স্ত্রী ববি সোনোওয়াল গগৈ এবং তাদের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে উত্তমের ভাইকে জানান যে, উত্তম হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাশাপাশি, বাড়িতে ডাকাতি হয়েছিল বলেও তারা একটি মিথ্যা গল্প ফেঁদেছিল।
তবে, মৃতের ভাইয়ের সন্দেহের জেরেই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়। তিনি জানান, “দাদার মৃত্যুর খবর পেয়েই আমরা তাঁদের বাড়িতে যাই। গিয়ে দেখি দাদার একটা কানে কাটা দাগ রয়েছে। এই নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই আমাকে বলা হয়, বাড়িতে ডাকাতি হয়েছিল। দাদা যদি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তাহলে তাঁর কানে কাটা দাগ এল কী করে?” এই অসঙ্গতি লক্ষ্য করেই পরিবারের সদস্যরা পুলিশের দ্বারস্থ হন।
উত্তমের ভাই আরও বলেন, “আজ আমরা জানতে পারলাম, বউদি, তাঁর মেয়ে ও আরও দু’জনকে দাদাকে খুনের অভিযোগে ধরা হয়েছে।”
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ডিব্রুগড়ের এসএসপি রাকেশ রেড্ডি জানান, ধৃত দুই যুবকের সঙ্গে ববি এবং তার মেয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এসএসপি রেড্ডি নিশ্চিত করেছেন, “ববিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর মেয়ে এবং আরও দুই যুবককে ধরা হয়েছে। মৃতের মেয়ে খুনের কথা স্বীকার করেছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে এদিন স্থানীয় বাসিন্দারা বোরবরুয়া থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাদের দাবি, এমন জঘন্য অপরাধের জন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
তবে ঠিক কী কারণে উত্তম গগৈকে খুন করা হয়েছে, এবং এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কি কোনো সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা এখনও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং এর পেছনের আসল উদ্দেশ্য উন্মোচনের অপেক্ষায় রয়েছে ডিব্রুগড়ের মানুষ।