মহার্ঘভাতা (ডিএ) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কর্মচারী সংগঠনের আইনি লড়াই এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। বুধবার, দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে শীর্ষ আদালত অন্যান্য রাজ্যের সরকারি কর্মীরা কী হারে ডিএ পাচ্ছেন, তা জানতে চেয়েছে। বিচারপতিদের এই জিজ্ঞাসা মামলার মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিচারপতি পি. কে. মিশ্র এবং বিচারপতি সঞ্জয় কারোলের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। বুধবার কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবীরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি মিশ্র কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, “অন্যান্য রাজ্যের সরকারি কর্মীরা কি বেশি ডিএ পান? দিল্লির বঙ্গভবন বা চেন্নাইয়ে কর্মরত রাজ্য সরকারের কর্মীরা কি বেশি ডিএ পান? যদি এমন হয়, তাহলে তার উদাহরণ দিন।” জবাবে কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম জানান, তাঁদের কাছে সেই সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে।
বিচারপতি মিশ্র আরও জানতে চান, অন্য রাজ্যের কর্মীদের জন্য ডিএ সংক্রান্ত কোনো বিশেষ নির্দেশিকা জারি হয়েছিল কিনা। উত্তরে আইনজীবী বলেন, “সম্ভবত না।” এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মন্তব্য করেন, “তার মানে আপনারা দীর্ঘদিন ধরে প্রাপ্য ডিএ পাচ্ছেন না?” আইনজীবী স্বীকার করেন যে মাঝে সামান্য কিছু ডিএ দেওয়া হয়েছিল।
আদালতে রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে তারা বাধ্য নন এবং ডিএ কোনো মৌলিক অধিকার নয়। বুধবার বিচারপতি মিশ্র এই প্রসঙ্গে বলেন, “আগেকার মহাজনদের মতো রাজ্য সরকার অর্থ সঞ্চয় করে রাখছে, যাতে সেটা অন্য খাতে খরচ করা যায়।” তিনি আরও বলেন, এই মামলার মূল বিষয়বস্তু হলো, রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ-র ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) প্রযোজ্য কি না।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “কিছু কর্মচারীকে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিচ্ছে রাজ্য। তার মানে বুঝতে হবে, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনেই তারা চলছে।” সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরই এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।