রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলাকালীন ফের একবার কড়া সমালোচনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি পিকে মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার ধার্য করা হয়েছে। এদিন আদালত রাজ্যকে সরাসরি বলে, “রাজ্যকে আইন মেনে চলতে হবে।”
আদালত এদিন রাজ্যের আইনজীবীর কাছে জানতে চায়, রাজ্য সরকার নিজেই যখন রোপা নীতির ভিত্তিতে বকেয়া ডিএ দেওয়ার কথা বলেছিল, তখন সেই প্রতিশ্রুতি কেন পূরণ করা হচ্ছে না। এর জবাবে রাজ্যের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারের আর্থিক নীতি এক নয়। ডিএ দেওয়ার আগে রাজ্য সরকার মূল্যবৃদ্ধি এবং বাজেট সংক্রান্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, রাজ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা রয়েছে এবং কেন্দ্রের হারে ডিএ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। রাজ্যের স্মারকলিপিতে ডিএ বাড়ানোর কথা থাকলেও, রোপা আইনে আলাদা সূচক তৈরির কথা বলা নেই।
অন্যদিকে, মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবীরা রাজ্যের এই যুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেন। আইনজীবী রউফ রহিম অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার একটি সুনির্দিষ্ট নীতি ছাড়াই স্বেচ্ছাচারীভাবে ডিএ দিচ্ছে। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে লড়াই করার জন্য বর্ধিত ডিএ অপরিহার্য। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি মিশ্র বলেন যে, রাজ্য সরকার নিজেই বিভ্রান্তি তৈরির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
আরেক আইনজীবী করুণা নন্দী সওয়াল করেন যে, সর্বভারতীয় ভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI) একটি বিজ্ঞানসম্মত সূচক যা লেবার ব্যুরো দ্বারা তৈরি। অথচ রাজ্য সরকারের নিজেদের কোনো নির্দিষ্ট সূচক নেই এবং তারা নিজেদের নিয়মও ঠিকমতো মানছে না।
এই শুনানি আবারও প্রমাণ করল যে ডিএ নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের টানাপোড়েন অব্যাহত। পরবর্তী শুনানিতে এই মামলার কোনো নিষ্পত্তি হয় কি না, সেটাই এখন দেখার।