মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়কালেই ফের বড় বিপাকে পড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল সিনেটে অনুমোদন না পাওয়ায় ফেডারেল সরকার ‘শাটডাউন’ হয়ে গিয়েছে। বুধবার ভারতীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টা (১ অক্টোবর, মার্কিন অর্থবর্ষের শুরু) থেকে এই অচলাবস্থা শুরু হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাবে প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার সরকারি কর্মীকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হবে।
ঘটনার সূত্রপাত ও রাজনৈতিক চাপান-উতোর
গত ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থবর্ষের শেষ দিনে নতুন তহবিল বিল নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধের কারণে কোনো সমঝোতা হয়নি। সেনেটে বিলটি পাশ করাতে ১০০ সদস্যের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ জনের ভোট প্রয়োজন হলেও রিপাবলিকানদের সদস্য সংখ্যা মাত্র ৫৩। ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন না পাওয়ায় বিলটি প্রেসিডেন্টের টেবিল পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি।
এই ঘটনার জন্য ট্রাম্প প্রশাসন সরাসরি ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছে। পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যে:
“শাটডাউনের অনেক সুবিধা রয়েছে। আমরা যেগুলো চাই না, সেগুলো বাদ দিতে পারি। অনেককে ছাঁটাই করা হবে। তাঁরা প্রত্যেকে ডেমোক্র্যাট।”
ট্রাম্পের এই মন্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, শাটডাউন কেবল সরকারি কাজে প্রভাব ফেলবে না, বরং রাজনৈতিক উত্তেজনাও বাড়াবে। এটি গত দুই দশকের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পঞ্চম বড় অচলাবস্থা।
শাটডাউনে কোথায় কোথায় প্রভাব?
এই আর্থিক অচলাবস্থার কারণে মার্কিন সরকারের বহু কর্মীর বেতন বন্ধ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও:
কর্মচারী ও দপ্তর: প্রায় ৭.৫ লক্ষ সরকারি কর্মচারী ছুটিতে যেতে বাধ্য হবেন। অনেক সরকারি অফিস ও সংস্থা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে, শুধুমাত্র জরুরি পরিষেবাগুলি চলবে।
জরুরী পরিষেবা: সরকারের ব্যয় কমাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, মার্কিন সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের কাজ করে যেতে হবে।
অর্থনৈতিক প্রভাব: ছোট ব্যবসার জন্য ঋণ পরিষেবা বন্ধ হতে পারে। একাধিক সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং শিক্ষা বিভাগ প্রভাবিত হবে।
বিমান চলাচল: বিমান সংস্থাগুলি সতর্ক করে দিয়েছে যে শাটডাউনের কারণে সরাসরি বিমান চলাচলে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতীতের দীর্ঘতম অচলাবস্থা
ইতিহাস বলছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বার সরকার অচল হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ অচলাবস্থা হয়েছিল ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেই (২০১৮ সালের শেষ থেকে ২০১৯ সালের শুরু পর্যন্ত)। সেই সময় টানা ৫ সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা চলায় লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, ঠিকাদার এবং সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছিলেন।