ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০% পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণাটি কেবল একটি বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং ভারতের জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর এক বহুমুখী আক্রমণ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ না করার জন্য ২৫% ‘পেনাল্টি’ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত ভারতের স্বাধীন বিদেশনীতির ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি, বাণিজ্য ঘাটতি পূরণের নামে ২৫% ‘রেসিপ্রোকাল’ শুল্ক আরোপের ফলে ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শিল্প, বিশেষ করে শ্রমনির্ভর খাত, চরম বিপদের মুখে পড়েছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারতের রপ্তানি অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি—বস্ত্র, হীরা ও গয়না, কার্পেট এবং সামুদ্রিক খাদ্য শিল্প। যেমন, বোনা পোশাকের ওপর ট্যারিফ ৬৩.৯% এবং হীরা ও স্বর্ণের ওপর ৫২.১% হয়ে যাওয়ায় এই পণ্যগুলোর মার্কিন বাজারে টিকে থাকা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়বে। এর ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।
এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। একদিকে, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা এবং কৃষকদের স্বার্থ রক্ষা করা; অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা। GTRI-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তবের মতে, “যদি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, তাহলে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের জন্য মার্কিন বাজার সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়বে।” এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে ভারত-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তির মতো নতুন বাজার খুঁজে বের করা একটি সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে। তবে এই সংকটের মূল সমাধান নির্ভর করছে রাজনৈতিক স্তরে আলোচনার উপর। এই ২০ দিনের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন যদি তাদের অবস্থান বদলায়, তবেই ভারতের অর্থনীতির ওপর থেকে এই কালো মেঘ সরতে পারে।