সোমবার সকাল থেকে শহরের সমস্ত রুটে মিনিবাস ও অটো পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মিনিবাস ও অটোচালকদের অভিযোগ, অনুমতিহীন টোটোর দাপটে তাদের রোজগার কমে যাওয়ায় তারা এই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এর ফলে অফিসযাত্রী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং দূরপাল্লার যাত্রীরা চরম অসুবিধার সম্মুখীন হন।
মিনিবাস মালিকদের অভিযোগ, টোটো কোনো ট্যাক্স না দিয়েই তাদের নির্ধারিত রুটে যাত্রী পরিবহন করছে। এর ফলে যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মিনিবাস চালানো লোকসানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই অভিযোগ তুলে অটোচালকদের সংগঠনও তাদের পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। সোমবার সকাল থেকে যাত্রীরা বাসস্ট্যান্ডে এসে জানতে পারেন যে মিনিবাস ও অটো বন্ধ। অনেককে বেশি ভাড়া দিয়ে ট্যাক্সি বা ক্যাবে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন যে, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাদের নাকাল হতে হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে মহকুমা শাসক সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পরিবহন দপ্তরকে বলা হয়েছে মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের সঙ্গে কথা বলতে।” এরপর মিনিবাস মালিকদের সংগঠনের সদস্যরা পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু কোনো সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি।
মিনিবাস মালিক সংগঠনের সভাপতি অলোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পরিবহন দপ্তরে গিয়েছিলাম। আমাদের প্রধান দাবি ছিল, মিনিবাসের রুটে টোটো চলাচল বন্ধ করতে হবে। কিন্তু আধিকারিকদের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাইনি। তাই আমরা মিনিবাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখছি।”
অটোচালকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা সরকারকে সমস্ত রকম ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করেন, অথচ টোটোগুলো বিনা ট্যাক্সে তাদের রুটে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। এক বাসকর্মী সহদেব কুণ্ডু বলেন, “৩৫ বছর ধরে কন্ডাক্টারি করছি। আগে ভালো রোজগার ছিল, এখন কর্মীদের বেতন তো দূরের কথা, সারাদিন বাস চালিয়ে ডিজেলের খরচও ওঠে না।”
অন্যদিকে, মিনিবাস ও অটো পরিষেবা বন্ধ থাকার সুযোগে সোমবার টোটোচালকদের রোজগার ভালো হয়েছে। অনেক টোটোচালক জানিয়েছেন, পেটের তাগিদেই তারা টোটো চালাচ্ছেন এবং তাদের বিকল্প কোনো আয়ের পথ নেই। তবে মঙ্গলবার থেকে অটো পরিষেবা চালু হবে কি না, তা নিয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।