গত প্রায় দেড় মাস ধরে লাগাতার নিম্নচাপ ও প্রবল বৃষ্টির কারণে রাজ্যের সবজি বাজারে আগুন লেগেছে। খুচরো বাজারে সব ধরনের সবজির দাম লাগামছাড়া বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। রবিবার ছুটির দিনে বাজার করতে গিয়ে ক্রেতারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলাতেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
যে ফুলকপি কিছুদিন আগেও ৩০ টাকায় প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছিল, এখন তার দাম বেড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় ঠেকেছে। পটলের দাম ৪০-৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০-৮০ টাকায় পৌঁছেছে। বড় আকারের বেগুন তো আবার ১০০ টাকা প্রতি কেজি ছুঁয়েছে, যা মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
অধিকাংশ সবজির এই আকাশছোঁয়া দামে সাধারণ মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কলকাতা, বাঁকুড়া, উত্তর ২৪ পরগনা সহ রাজ্যের সর্বত্রই একই ছবি। অনেক ক্রেতাই মনে করছেন, যদি টাস্ক ফোর্স আরও তৎপর হতো, তাহলে হয়তো সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতেন।
তবে বিক্রেতাদের দাবি, এই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো উপর্যুপরি নিম্নচাপের প্রভাবে মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাত। বিগত কয়েক সপ্তাহে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রবল বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিঘার পর বিঘা সবজি খেত জলের তলায় চলে যাওয়ায় ফলন কমে গেছে, আর এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে সবজির দামে।
বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী, যে উচ্ছে কিছুদিন আগেও ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, তা এখন ৮০ টাকায় পৌঁছেছে। কাঁকরোলের দামও ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ওল ৫০ টাকা কেজি থেকে বেড়ে ৮০ টাকা হয়েছে। শসার দামও কেজি প্রতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কলকাতার বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা প্রতি কেজি, আর ঢ্যাঁরশ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকার আশেপাশে। লাউয়ের দাম ৪০ টাকা হলেও, লঙ্কার দাম আকাশছোঁয়া। ১০০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে, এমনকি ১০০ গ্রাম লঙ্কা কিনতে গেলেও ১০ থেকে ২০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
সবজির এই লাগামছাড়া দামে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ দিশাহারা। দ্রুত এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে জনজীবনে আরও বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।