জীবিত ব্যক্তি সরকারি খাতায় মৃত, এমন আজব ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর কাউগাছি এলাকায়। সেখানকার বাসিন্দা কার্তিক চন্দ্র সিংহ রায় দিব্যি জীবিত থাকা সত্ত্বেও সরকারি নথিপত্রে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘটনা দেখে সিংহ রায় পরিবারের সদস্যরা কার্যত দিশেহারা।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন পরিবার পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রির জন্য কাগজপত্র দেখছিলেন। সেখানেই কার্তিক বাবুর পুত্র জানতে পারেন যে, তাঁর বাবা এবং প্রয়াত জেঠু নিমাই চন্দ্র সিংহ রায়— দু’জনকেই সরকারি খাতায় ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, কোভিডকালে নিমাই চন্দ্র সিংহ রায়ের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের তরফ থেকে কার্তিক চন্দ্র সিংহের নামেও একটি ভুয়ো মৃত শংসাপত্র বের করা হয়।
পরিবারের দাবি, এই ভুয়ো শংসাপত্রের মাধ্যমে তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই গুরুতর অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই তাঁরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিষয়ে কার্তিক চন্দ্র সিংহ রায় সম্পূর্ণ জীবিত অবস্থায় রয়েছেন এবং তাঁর পরিবার দ্রুত এর সমাধান চাইছে।
ঘটনার গুরুত্ব বুঝে বাসুদেবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ এই জালিয়াতির তদন্ত শুরু করেছে। কাউগাছি এক পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এই বিষয়ে নিজেদের দায় এড়িয়ে বলেন, “আমাদের পঞ্চায়েত থেকে কোনো জীবিত ব্যক্তির মৃত শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। এই শংসাপত্র কোথা থেকে এসেছে, তা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
এই ঘটনা শুধু সিংহ রায় পরিবার নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মানুষজন প্রশ্ন তুলছেন, সরকারি নথিপত্র যদি এত সহজে বিকৃত করা যায়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? পুলিশ এখন তদন্ত করে দেখছে, এই জালিয়াতির নেপথ্যে কারা রয়েছে এবং কীভাবে এই ভুয়ো শংসাপত্র তৈরি করা হলো।